পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তাঞ্জোবের অদ্ভুত শৈল।
১৪৩

 মুহূর্তকাল স্তম্ভিত হইলাম, পরে দৃষ্টিপাত করিয়া সমস্ত বুঝিলাম। সুহো! রথের চূড়াটিও মন্দির-চূড়ার অনুকরণে নির্ম্মিত। আমা হইতে বহুদূরে মন্দিরের সম্মুখ দিয়া রথটাকে টানিয়া লইয়া যাইতেছে। আমি যেখানে আছি, তাহারই নীচে, আকৃষ্ট রঞ্জু, উন্মত্ত জনতা, হস্তিবৃন্দ, সহযাত্রিদল—সমস্তই যেন একটা খাতের মধ্যে প্রচ্ছন্ন। যে সিংহাসনের উপর অদৃশ্য বিগ্রহটি আসীন, তাহারই উপরিস্থ চূড়াটিমাত্র আমি দেখিতে পাইতেছি। কোনও জয়ধ্বনি কিংবা কোনও বাদ্যনির্ঘোষ শুনা যাইতেছে না। বিষ্ণুরথের এই শেষ প্রতিবিম্ব আমার নেত্রবিম্বে পতিত হইল। ছাদের ধার দিয়া, প্রস্তররাশির মধ্যে, যেন একটি মন্দির-চূড়া একাকী নিস্তব্ধভাবে আপনা-আপনি চলিতেছে।


মাদুরায় ব্রাহ্মণদিগের গৃহে।

 মাদুরা নগর পূৰ্বে এক জন বিলাস-আড়ম্বর-প্রিয় রাজার রাজধানী ছিল। এখানে হরপার্বতীর উদ্দেশে উৎসর্গীকৃত একটি মন্দির আছে। “মীনাক্ষী” পার্বতী শিবের গৃহিণী। মন্দিরটি আমাদের “ভ” প্রাসাদ অপেক্ষাও বৃহৎ, শিল্পকর্মে ও খোদাই-কাজে অধিকতর ভূষিত, এবং তাহারই মত বিবিধ আশ্চর্য্য সামগ্রীতে পরিপূর্ণ।

 দয়াশীল ত্রিবন্ধুর মহারাজের প্রভাবে ও অনুগ্রহে আমি মন্দিরের অনেকটা অভ্যন্তরে প্রবেশ করিতে পারিব, অন্তভৌম কক্ষের মধ্যে নামিতে পারিব, দেবীর ঐশ্বর্যবিভব ও সাজসজ্জা দেখিতে পাইব, সন্দেহ নাই।

 নগরটি অতিমাত্র ভারতীয়-লক্ষণাক্রান্ত হইলেও, বৈদেশিকদিগের প্রতি সাদর-আহ্বান-বিতরণে বিমুখ নহে। মন্দিরদর্শনের জন্য অনেক বৈদেশিক এখানে আসিয়া থাকে। অন্যান্য পার্শ্ববর্তী রাজ্যে, মন্দিরগুলিতে বৈদেশিকের প্রবেশ যেরূপ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, এখানে সেরূপ নহে। মাদুরায় গিয়া যাহাতে আমি তত্য গৃহস্থ পরিবারবর্গের মধ্যে সাদরে গৃহীত হই, এই