পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তাঞ্জোবের অদ্ভুত শৈল।
১৪৫

হিন্দু-আরব-ধরণের বহুব্যয়সাধ্য প্রকাণ্ড স্মৃতিসামগ্রী; তা ছাড়া পল্লীপ্রদেশের দূরস্থ তালকুঞ্জ পর্য্যন্ত মন্দিরাদি-সমেত সমস্ত নগরটি দৃষ্টিপথে পতিত হয়। লাল রঙ্গের প্রকাণ্ড মন্দিরচূড়াগুলি চারি দিক হইতে বিহঙ্গ-সঙ্কুল গগনমণ্ডলে সমুথিত। অবশেষে উহারা আমাকে গৃহের পুস্তকাগার দেখাইল,উহা দার্শনিক গ্রন্থে ও ধর্ম্মগ্রন্থে পরিপূর্ণ। ইহাতে সূচিত হইতেছে, আমার অভ্যর্থনাকারিগণ, অতীব বিশিষ্ট ও অতীব উচ্চ-অঙ্গের জ্ঞানানুশীলনে নিরত। উহাদিগকে নগ্নকায় দেখিয়া প্রথমে সহসা যেরূপ মনে হয়, তাহার সম্পূর্ণ বিপরীত। প্রস্থান করিবার পূর্ব্বে আবার সেই অভ্যর্থনাশালার আমাকে আসিতে হইল। সেখানে একটুখানি বসিলাম। সেই যুবকদিগের মধ্যে এক জন একটা দীর্ঘ গিল্টি-করা সেতার লইয়া মৃদুস্বরে দুই চারিটা সুমধুর গৎ বাজাইল। মহিলাদিগকে যে উহারা আমার সম্মুখে আনিবে না,—ইহা জানা কথা। কিন্তু বিদায়গ্রহণ করিবার পূর্ব্বে, তিন চারি বৎসর বয়স্কা ছোট দুইটি বালিকাকে আমার সম্মুখে আনিয়া উপস্থিত করিল। বালিকা দুটি অতি শিষ্ট শান্তভাবে আমার নিকটে আসিল,আদপে ভয় করিল না। উহাদের পরিচ্ছদের মধ্যে, শিকলে বোলানো, হৃৎপিণ্ডাকৃতি একটা সোনার তক্তি—এবং সেই শিকলটা কটিদেশে বেষ্টিত। তক্তিটা যথাযোগ্যরূপে নীচে নামিয়া আসিয়াছে। উহাদের হস্তপদ-গুরুভার বলয় নূপুরে ভূষিত। বালিকা দুটি যেন সৌন্দর্যের প্রতিমা;—অনিন্দ্য-গঠন মনোেমোহিনী যেন দুইটি ক্ষুদ্র দেবীমূর্তি। রং উজ্জ্বল পিত্তলের ন্যায়; দেহ সুনম ও মাংসল; হাসি-হাসি সুগ্নভীর কালো চোখ,—পদ্মরাজি অতুলনীয়; চারিধারে কজ্জলের রেখা।


দয়াশীল নর্ত্তকী-বালামণি।

 মাদুরা নগরে একটি নর্তকী আছে,—সে যেমন রূপলাবণ্যের জন্য সেইরূপ বদান্যতার জন্যও প্রখ্যাত। এই শ্রেণীর রমণীদিগের চিরপ্রথা-