পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তাঞ্জোবের অদ্ভুত শৈল।
১৪৭

ভূমির ভাব, দূরত্বের ভাব, মানস-পটে অঙ্কিত হয়। নাট্যশালাটি অতীব বিশাল; উহাতে সহস্রাধিক লোক ধরিতে পারে; কিন্তু উহার গঠনে কোন প্রকার মার্জিতরুচির পরিচয় পাওয়া যায় না;—মন্দিরের ধারে, ধর্ম্মমহোৎসবের সময়ে যেরূপ গৃহ এখানে সচরাচর দেখিতে পাওয়া যায়, সেইরূপ কাঠ দৰ্মা বাঁশ দিয়া হালকা ধরণে নির্মিত। রঙ্গপীঠের দুই পার্শ্বে, পুরাতন রাজবংশীয় রাজকুমারীদিগের বসিবার কক্ষ। কিন্তু, আজ তাঁহার আসিবেন না, আজ তাঁহাদের “আসিবার দিন” নহে। আর সর্ব্বত্রই, নাট্যশালার সমস্ত আসনগুলিই প্রেক্ষকমণ্ডলীর দ্বারা অলঙ্কৃত। ঘরের ভিতরটা খুব গরম, এবং ফুলের গন্ধে আমোদিত।

 সেই লুপ্ত ভাষা—যে ভাষা হিন্দু ইউরোপীয় ভাষাসমূহের মাতৃস্থানীয়া, —সেই সংস্কৃত ভাষায় বালামণি গান গাহিতেছে, এবং সেই ঘোর পুরাকালে নাটকটি যে ভাবে লিথিত হইয়াছিল, ঠিক সেই ভাবে সমস্তটা অভিনীত হইবে; শ্রোতৃমণ্ডলীর মধ্যে, আমি ছাড়া আর সকলেরই এতটুকু পাণ্ডিত্য আছে যে, উহা শুনিয়া বুঝিতে পারে।

 আখ্যানবস্তুটি মোটামুটি এইরূপ; আজ রাত্রে, বালামণি যাহার ভূমিকা গ্রহণ করিয়াছে, সেই রাজকুমারীকে, সাত জন রাজকুমার -সকলেই সহোদর ভাতা—এক সঙ্গে ভালবাসে। পাছে কোন ভ্রাতার মনে কষ্ট হয়, এই জন্য তাহারা সকলেই প্রতিজ্ঞা করিয়াছে, কেহই উহাকে বিবাহ করিবে না; এমন কি, তাহাদের পিতা, যে ভ্রাতার জন্য এই বিবাহের সম্বন্ধ স্থির করিয়াছেন, সেও উহাকে বিবাহ করিবে না, এইরূপ শপথ করিয়াছে। প্রথম প্রথম, তাহারা সকলেই সুখ স্বচ্ছন্দে কাল যাপন করিতেছিল, রাজকুমারীর বন্ধুত্বে ও তাহার স্মিতহাস্যেই তাহারা সন্তুষ্ট ছিল। কিন্তু একদিন যখন তাহারা মৃগয়ার্থ কোন বনে গমন করে, কতকগুলা দুরাত্মা দৈত্য, শুদ্ধসত্ব শুভ্রকেশ মুনির রূপ ধারণ করিয়া তাহাদিগকে ছলিতে আসিল। তাহাদের প্রত্যেকের মনে কামজ লালসা উদ্বোধিত করিয়া