পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫০
ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ

ছবিটি প্রতিবিম্বিত। আরও কত সৎকার্য সে করিয়াছে, তাহার বিবরণ আজ অনেকের মুখে শুনিলাম। তাহার একটি সৎকার্যের উল্লেখ করি; - গতমাসে, কতকগুলি য়ুরোপীয় মহিলা, হিন্দু-অনাথা-বালিকাশ্রমের জন্য চঁদা সংগ্রহ করিতে বাহির হইয়া, একটা গৃহের নিকটে আসিয়া যখন দ্বারে আঘাত করিলেন, তখন বালামণি, স্মিতমুখে, একহাজার টাকার নোট তাঁহাদের হস্তে অৰ্পণ করিল। বালামণি জাতিনিৰ্বিশেষে সকলকেই সাহায্য করিয়া থাকে, তাহার গৃহের পথটি দরিদ্রমাত্রেরই সুপরিচিত।


দেবালয়।

 ভারতে, দেবালয়ের খিলান-মণ্ডপ নিম্ন, সমাধিমন্দিরের ছাদের ন্যায় গুরুভার ও ভারাবনত; এইজন্য দেবালয়ের মধ্যে, প্রায় সময়ের পূর্ব্বেই সন্ধ্যার আবির্ভাব হয়।

 অস্তমান সূর্যের আলো এখনও রহিয়াছে; কিন্তু ইহারই মধ্যে মাদুরার বৃহৎ রন্দিরের প্রবেশপথের-প্রস্তরময় খিলান-পথের দুই ধারে ছোট ছোট দীপ জ্বালান হইয়াছে। ইহা মন্দিরের একপ্রকার প্রবেশ-দালান; এইখানে ফুলের মালা বিক্রী হয়। কুলঙ্গী প্রভৃতি মন্দিরের সমস্ত খোঁজখাঁজের মধ্যে, খিলান-পথের দুইধারে যে প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড মূর্তি রহিয়াছে তাহাদের ফাঁকের মধ্যে মাল্যবিক্রেতারা তাহাদের দোকান বসাইয়াছে। আমার ন্যায় কোন লোক বাহির হইতে আসিলেই একটা ছায়া পড়িয়া, সমস্তই যেন একসঙ্গে মিশিয়া যায়;—পুতুলগুলা, বিকট মূর্ত্তিগুলা, মনুষ্যমূর্তি, বড় বড় প্রস্তর-মূর্তি, সেই সব বহুবাহুবিশিষ্ট মূর্ত্তি—যাহাদের অঙ্গভঙ্গী প্রভৃতি দ্বিবাহু বিশিষ্ট মানুষেরই মত—সমস্তই মিশিয়া যায়। সেখানে ‘ধর্ম্মের গরুরা’ও রহিয়াছে, উহারা সমস্ত দিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরিয়া বেড়ায় এবং ঘুমাইবার জন্য মন্দিরে প্রবেশ করিবার পূর্ব্বে, খাড়া ও ফুল ধীরে অন্থে চর্বণ করে।