নিক্ষেপ করিতে সাহস করে না,—কেন না, যাহা তাহাদের অন্ত্র হইতে নিঃসৃত, তাহাও তাহাদেরই ন্যায় পবিত্র। বড় বড় ডানা-ওয়ালা বাদুড় চাম্চিকা ভয়চকিত হইয়া আমাদের মাথার উপর ক্রমাগত ঘুরিয়া বেড়াইতেছে।
আমার পথপ্রদর্শকেরা, কোন এক বিশেষ মুহূর্ত্তে, উৎকণ্ঠিত হইয়া তাড়াতাড়ি চলিতে লাগিল; সেই সময়ে আমরা একটা অপেক্ষাকৃত উচ্চ ও তমসাচ্ছন্ন দালানের সম্মুখ দিয়া যাইতেছিলাম; সেই দালানের গভীর-দেশে কতকগুলা বিকটাকার দেবমূর্ত্তি কতকগুলি দ্বীপের আলোকে আমি ‘চোরা-গোপ্তান্’ দেখিয়া লইয়াছিলাম। আমাকে যাহারা লইয়া যাইতেছিলেন তাহাদের মধ্যে একটি ব্রাহ্মণ, আমার নিকট আসিয়া মৃদুস্বরে আমাকে বলিলেন ঐটিই সর্ব্বাপেক্ষা পবিত্র স্থান; আগে আমাকে বলেন নাই, পাছে আমি বেশী দেখিয়া ফেলি।
অবশেষে, এই গুরুপিণ্ডাকার স্তম্ভারণ্যের একটা জায়গায় আসিয়া পুরোহিতেরা থামিলেন; এই স্থানটি খুব বিশাল ও জম্কালো। কতকগুলা বৃহৎমন্দিরের মধ্যবর্ত্তী যেন একটা চৌমাথা-রাস্তা। এইখানে অনেকগুলি দালানের কুটিম উদ্ঘাটিত ও সর্ব্বদিকে প্রসারিত হইয়া ক্রমে ছায়ান্ধকারে মিশাইয়া গিয়াছে। অখণ্ড প্রস্তরের বিরাটাকার, বিগ্রহ সমূহ চারিদিক বেষ্টন করিয়া আছে; উহারা বল্লম, অসি, নরমুণ্ড হস্তে ধারণ করিয়া আস্ফালন করিতেছে; উহারা কালো, চিক্চিকে, তেলা;—হস্তঘর্ষণে উহাদের উপর লম্বা-লম্বা দাগ পড়িয়াছে; উহারা লোকের গাত্রঘর্ম্ম শোষণ করিয়াছে! কতকগুলি বেদীর উপর, তাম্র ও রৌপ্য সামগ্রী ঝিকমিক্ করিতেছে; কতকগুলা পিতলের চুড়াকার সামগ্রী বহুশতাব্দিব্যাপী কালপ্রভাবে বাঁকিয়া গিয়াছে,—বোধ হয় পূর্ব্ব্বে দীপাধার ছিল;—এই সমস্ত দেবীর রহস্যময় পূজার সামগ্রী। এবং ইহারই মাঝখানে, দীর্ঘকুন্তল ও নগ্নকায় ভিক্ষুকের জনতা; মন্দিরই