পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৪
ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ

তাহারা দেওয়াল বাহিয়া উঠিয়া দম্মার ঝাপগুলা সরাইয়া দিল, ঝাপগুলা অপসৃত হইলে, দেয়ালের গায়ে কোন কোন স্থানে আললা আসিবাক ফুকোর-পথ দেখা গেল। কিন্তু তাহা থাকা না থাকা সমান, ঠিক রাত্রির মত অন্ধকার,—দীপ জ্বালানো আবশ্যক।

 কতকগুলি নগ্নকায় ক্ষুদ্র বালক, দীপ কিম্বা মশাল লইয়া দৌড়িয়া আসিল; এই মশালগুলা মান্ধাতা-যুগের, এই জ্বলন্ত মশাল গুলি হইতে খুব ধোয়া উঠিতেছে; এইগুলি দীর্ঘ পিত্তলদণ্ড,—অগ্রভাগ শুড়ের মত বাকানো।

 লোহার পতর-মারা একটা দ্বার উদঘাটিত হইল, সর্ব্বপ্রথমেই সেই ক্ষুদ্র বালকেরা প্রবেশ করিল•••এখন আমরা দেবীর বিচিত্র পশুশালায় উপস্থিত; জীবন্ত পশুর প্রমাণ একটা রূপার গরু, কতকগুলা সোণার ঘোড়, সেই চির-আর্দ্র উষ্ণতার মধ্যে—সারি সারি সজ্জিত রহিয়াছে; বালকের আসিয়া সেই খোদিত মূর্তিদের নিকট আলো ধরিল; সেই আলোকে গরু ও ঘোড়ার সাজের রত্নগুলি ঝিমিক করিতে লাগিল। উপরে—ভীষণ প্রস্তরখিলানমণ্ডপে, পালোকহীন কতকগুলা ডানা ক্রমাগত সঞ্চালিত হইতেছে এবং সেই সঙ্গে মৃদু মৃদু তীক্ষ্ণ শব্দ শুনা যাইতেছে; বাদুড় চাচিকার ঝক্‌ উন্মত্তভাবে ঘোরপাক দিতেছে।

 লোহার পতর-মার দ্বিতীয় দ্বার; রূপা ও সোণার পশুদের জন্য আর একটা ঘর।

 তৃতীয় দ্বার এবং ইছাই শেষ-দ্বার। এই খানে একটি রূপার সিংহ, একটি সোণার প্রকাণ্ড ময়ূব-প্যাখোন তোলা; প্যাথেমের ‘চোগুলা পানা দিয়া রচিত; একটা রূপার গরু, তাহার মুখ নারীমুখের মত, কিন্তু আসল নারীমুখ অপেক্ষা অনেক বড়; হিন্দু রমণীর ন্যায়, কাণে ও নাসিকার অগ্রভাগে বিবিধ রত্নালঙ্কার ধারণ করিয়া রহিয়াছে। এই ঘরের কোণে দেবীর একটা সোণর পাল্কী রক্ষিত; এই পাল্কীর গায়ে