পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৬
ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ

 আবার সেই ভৎসনা, সেই দুর্দমনীয় হাসি, নেত্রভঙ্গীতে সেই বিজপের ভাব, আবার সেই নিরঙ্কুশ প্রেমের আহ্বান•••

 যাই হোক, নর্তকী এইবার থামিল। সব শেষ হইয়া গেল; আমার চমক ভাঙ্গিল; যে সব লোেক সেখানে ছিল তাহাদিগকে আবার আমি দেখিতে পাইলাম। আমার অভ্যর্থনার জন্যই এই মজলিসের আয়োজন হইয়াছিল; আবার আমি মজলিসের বাস্তব ভূমিতে পদার্পণ করিলাম।

 এইবার প্রস্থানের সময় হইয়াছে। প্রস্থানের পূর্ব্বে, নর্তকীকে আমি অভিনন্দন করিতে গেলাম। দেখিলাম, নর্তকী একটা মিহি রুমাল দিয়া মুখ মুছিতেছে; উহার বড় গরম বোধ হইতেছে, মুক্তাফলের ন্যায় স্বেদবিন্দু উহার ললাটে, উহার শ্যামল মসৃণ গাত্রে দেখা দিয়াছে।' এখন সে আদব-কায়দা-দুরস্ত, পাষাণ-শীতল, সুবিনীত, উদাসীন, হৃদয়-হীন অভিনেত্রী মাত্র; সে কৃত্রিম লজ্জার সহিত, আমার প্রশংসা গ্রহণ করিল, আমাকে সেলাম করিল; প্রত্যেকবারেই, অঙ্গুরী-বিভূষিত-সৰ্বাঙ্গুলি হস্তযুগলের দ্বারা আপনার মুখ ঢাকিতে লাগিল.••

 শত সহস্র বৎসর হইতে বংশানুক্রমে যাহাদের ব্যবসায় চলিয়া আসিতেছে সেই পুরাতন নর্তকীর বংশে ইহার জন্ম, ইহার হৃদয়ে মোহবিভ্রম ও ভোগবিলাস ছাড়া আর কি থাকিতে পারে?•••


পণ্ডিচেরী ছাড়িয়া।

 কাল পণ্ডিচেরী ছাড়িয়া, নিজামের রাজ্যের ভিতর দিয়া, ভারতের দুর্ভিক্ষ পীড়িত প্রদেশ রাজপুতদের রাজ্যে যাত্রা করিব।

 আমাদের পুরাতন উপনিবেশে আমি হদ্দ দশ দিন মাত্র রহিয়াছি, আশ্চর্য্য, ইহারই মধ্যে এই স্থান ছাড়িয়া যাইতে আমার কেমন একটু কষ্টবোধ হইতেছে। এতদিন ত আমি ভারতের একস্থান হইতে স্থানান্তরে লঘুহৃদয়ে প্রস্থান করিয়াছি! কেহ মনে করিতে পারে, আমি