ধূলির উপর আসিয়া পড়িতেছে।•••কে তবে বলিবে, পশ্চিমাঞ্চল হইতে দুর্ভিক্ষ আসিয়াছে—স্বকীয় বিকট দশন বাহির করিয়া দুর্ভিক্ষ ইহারই মধ্যে সীমান্তদেশ পার হইয়াছে। না-জানি তবে কোন্ জলাশয়ের জলসেকে,—কোন্ বিশেষ-রক্ষিত উদ্যানে এই সমস্ত ফুল ফুটানো রহিয়াছে।
অবশেষে, সূর্যাস্তসময়ে, “সহস্র-এক রজনীর” ব্যক্তিগণ গৃহ হইতে বাহির হইতে লাগিল—সেই সব সৌখীন লোক, যাহাদের নেত্র নীলাঞ্জনে চিত্রিত, যাহাদের শ্মশ্রুজাল সিন্দুর-রঙ্গে রঞ্জিত, যাহারা কিংখাপের পোক কিংবা জরি-বসানো মখমলের পোষাক পরিয়া বাহির হইয়াছে, কণ্ঠে মণিমুক্তার কণ্ঠহার ধারণ করিয়াছে, এবং যাহাদের বামহস্তের মুষ্টির উপর একএকটা পোপাখী রহিয়াছে।
“স্বাগত নিজামবাহাদুর?”—এই কথাগুলি আবার একটা দ্বার প্রকোষ্ঠের চূড়াদেশে লিখিত রেখিলাম; সেই চূড়াদেশে নারাঙ্গি-রঙের একটা ক্রেপ, কাপড় টানা-—তাহাতে নেবু-হলদে ও গন্ধকি-হলদে রঙের ঝালর ঝুলিতেছে, ঝালরের উপর সবুজ-রঙেব চুমকি বসানো। এই দ্বারপ্রকোষ্ঠের পরেই—স্বর্ণচূড়া ও স্বর্ণ-"অর্ধচন্দ্র"-বিশিষ্ট, তুষার-শুভ্র একটা মজিদ। এই সান্ধ্য-নমাজের সময়ে, ভক্ত মুসলমানের এই মজিদে আসিয়া সমবেত হইয়াছে। উহাদের শুভ্র পরিচ্ছদ,—মাথায় মলমলের কাপড় জড়ানো পাগড়ি; দূর হইতে মনে হয়-যেন বিচিত্ররঙের এক প্রকার খুব বড়-বড় ফুল ছড়ান রহিয়াছে।••'
কিন্তু এই সময়ে একটা জনরব উঠিল,—নিজামের আসিতে এখনও বিলম্ব আছে; রামাদানের মাস নিশ্চয়ই পার হইয়া যাইবে, বোধ হয় আগামী মাসে আসিবেন, কিংবা আরো বিলম্ব হইতে পারে। ককে ‘আসিবেন, আল্লাই জানেন।