পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হৈদরাবাদে।
১৯৫

ভীষণ গুহা

 এই সকল গুহাগহ্বর, পৌরাণিক সমস্ত দেবতাদিগের নামেই উৎসর্গীকৃত; কিন্তু যেগুলি সর্ব্বাপেক্ষা বৃহৎ, তাহার প্রায় অধিকাংশই সেই মৃত্যুর দেবতা শিবের নামে প্রতিষ্ঠিত।

 পূর্ব্ব্বকালে, যাহাদের চিত্তে নানাপ্রকার ভীষণ ও বিরাট কল্পনার উদয় হইত, সেই সব মনুষ্য কত কত শতাব্দী ধরিয়া অতীব আগ্রহসহকারে পর্ব্বতের প্রস্তরপাষাণ খুদিয়া এই সমস্ত গুহাগহর প্রস্তুত করিয়াছে। উহাদের মধ্যে কতকগুলি বৌদ্ধযুগের, কতকগুলি ব্রাহ্মণযুগের এবং কতকগুলি আরো প্রাচীন জৈনরাজাদের আমলের। সভ্যতার বিভিন্ন যুগের মধ্য দিয়া, বিবিধ ধর্ম্মসম্প্রদায়ের মধ্য দিয়া, এই সকল আশ্চর্য খননকার্ণ অব্যাঘাতে ও ধারাবাহিকরূপে ভারতীয়-তক্ষণশিল্পিগণ-কর্তৃক সম্পন্ন হয়।

 এ বিষয়ের যিনি সর্ব্বাপেক্ষা প্রাচীন লেখক, সেই মাদিনামক একজন আরব এইরূপ বলেন প্রায় একসহস্র খৃষ্টাব্দে এই সকল গুহার অসীম মাহাত্ম্য ছিল; ভারতবর্ষের সকল দিক্ হইতেই অসংখ্য যাত্রী এখানে ক্রমাগত আসিয়া উপস্থিত হইত।

 এক্ষণে এই সকল গুহা পরিত্যক্ত হইয়াছে। দীর্ঘকালব্যাপী অনাবৃষ্টির ফলে চতুর্দিস্থ রুক্ষ-শুষ্ক প্রদেশটি জনশূন্য হইয়া পড়িয়াছে। এই মৃতকল্প প্রদেশের অভ্যন্তরে এই গুহাগুলি' কতকাল হইতে এইরূপ পরিত্যক্ত অবস্থায় ও নিস্তব্ধতার মধ্যে রহিয়া গিয়াছে, তাহাব নির্দেশ নাই।

 অধুনা এই সকল গুহায় উপনীত হইতে হইলে, একটা ছোটখাটো মরুভূমি অতিক্রম করিতে হয়; এই ভূমির বর্ণ মৃগচর্মের ন্যায়; ইহা সমুদ্রতটস্থ সৈকতভূমির ন্যায় সমতল; কেবল একএকটি নিঃসঙ্গ পর্বত