পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০৬
ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ

 মধ্যস্থলের মন্দিরগুলি পৃষ্ঠে ধারণ করিয়া হস্তিগণ সারি-সারি দণ্ডায়মান; ইহাদের যেরূপ শান্তভাব, তাহাতে এ স্থানের পক্ষে ইহাদিগকে “বেসুরো”, ও “বেখাপ্পা” বলিয়া মনে হয়। কিন্তু এই মন্দিরগুলির অপর পার্শ্বে গিয়া দেখিলাম, উহাদেরই সমান-উচ্চ আর কতকগুলা হস্তী অন্যান্য জীবজন্তুর ন্যায় যুঝাবুঝি ও যন্ত্রণার ভাবভঙ্গী প্রকটিত করিতেছে; কতকগুলা বাঘ ও কতকগুলা কল্পিত জীবজন্তু এই হস্তীদিগকে চাপিয়া ধরিয়াছে অথবা উহাদের উদরে দংষ্ট্রাঘাত করিতেছে। একে ত উহাদের দেহের পশ্চাদ্ভাগে দেয়ালের ভার চাপিয়া থাকায় উহারা যেন অর্ধনিষ্পেষিত অবস্থায় রহিয়াছে, তাহাতে আবার পরস্পরের মধ্যে প্রাণপণে যুদ্ধ চলিতেছে। এই পাশটাতেই গুহার প্রাচীর—সেই আদিম ভূস্তরের পাষাণরাশি—সর্বাপেক্ষা বেশি বুকিয়া রহিয়াছে। এই প্রাচীরের দশ কিংবা বিশ ফিট উচ্চে অত্রত্য অসংখ্য মূর্তিগুলার প্রথম রেখাপাত আরম্ভ হইয়াছে। প্রাচীরের সমস্ত তলদেশটা স্ফীত উদরের ন্যায় মসৃণ: স্থানে-শুনে যেন ফুলিয়া উঠিয়াছে—এই ফুলে গুলা দেখিলে মনে হয় যেন খুব ততলে নরম; এই স্ফীত প্রস্তরবাশি মনে হয় যেন কালো দৃর্ণিজলের পার্শ্বদেশ—মনে হয় যেন অত্রত্য ইমারৎ-আদি হইতে “বানডাকা”র মত স্ফীত জলরাশির একটা প্রবাহ নামিয়া আসিয়াছে, আর যেন সমস্ত ইমারৎ এখনি ভাঙিয়া পড়িবে এবং আমরা সকলেই তাহাতে চাপা পড়িয়া যাইব।•••

 অখণ্ডপ্রস্তরের যে মন্দিরগুলা হস্তিপৃষ্ঠের উপর সংস্থাপিত এবং যাহা খোদিত পৰ্বতে পরিবেষ্টিত-তৎসমস্তই আমরা প্রদক্ষিণ করিলাম। এখন কেবল বাকি উহাদের অভ্যন্তরে প্রবেশ করা; কিন্তু আমার পথপ্রদর্শক একটু ইতস্তত করিতেছে - কল্যকার সূর্যোদয় পর্যন্ত অপেক্ষা করিতে বলিতেছে।

 যে সিড়ি দিয়া ঐ সকল মন্দিরে প্রবেশ করা যায়, ঐ সিঁড়ির ধাপগুলা ভাঙিয়া-চুরিয়া বিশৃঙ্খল হইয়া পড়িয়াছে;—লগ্নপদের অবিরত