পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৭২
ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ।

টুকরা মাংস, এখানে কুত্রাপি দৃষ্ট হয় না। তাহার কারণ, হিন্দুরা আহারের জন্য কখনই জীবহিংসা করে না। এখানে বেশীর ভাগ বিক্রী হয়—নির্বৃত গোলাপফুল। আতর প্রস্তুত করিবার জন্য, কিংবা শুধু ফুলের মালা বানাইবার জন্য রাশিরাশি গোলাপ বাজারে আনীত হয়।

 চুড়াসমন্বিত অতি শুভ্র সিংহদ্বারসমূহের মধ্য দিয়া সুবিশাল রাজপ্রাসাদাঞ্চলে প্রবেশ করিতে হয়। এই সব প্রাসাদ একেবারে তুষারশুভ্র; প্রাসাদের চারিধারে গোলাপের কেয়ারী; তাহার চতুর্দ্দিকে অবসাদ ম্রিয়মাণ বৃহৎ তরুরাজি,—যাহারা এই এপ্রিলমাসেও শারদীয় বর্ণ ধারাণ করিয়া আছে। এই সকল বিজন উপবন দিন-দিন শুকাইয়া যাইতেছে; রাজা তাহার কোন প্রতিবিধান করিতে পারিতেছেন না। এই সব ক্ষুদ্র হ্রদ—এখন শুষ্ক; উহাদের তটদেশে চমৎকার খোদাই-কাজ-করা চতুষ্কমণ্ডপসমূহ; যে সময়ে একটু বৃষ্টি হইয়াছিল, তাহারই একটু জল চতুষ্কপ্রাঙ্গণে এখনো জমিয়া আছে; এবং তাহারই প্রভাবে অঙ্গনভূমি এখনো নিবিড় শাখা-পল্লবে বিভূষিত।

 গোলাপের কেয়ারীতে শরতের ভাব থাকিলেও, যত্নপ্রভাবে গাছগুলা এখনো সতেজ রহিয়াছে; ময়ূর ও বানরেরা বিচরণ করিতেছে; ভূমির এই শুষ্কতায়,—এই দুর্ভিক্ষের সূচনায়, বানরগুলা যেন বিমর্ষ হইয়া পড়িয়াছে।

 রাজা এখন জ্বরে ভুগিতেছেন; তাই আরোগ্যলাভের জন্য তিনি এখন পার্শ্ববর্ত্তী কোন শৈলচূড়ায় বিশ্রাম করিতেছেন। তথাপি আমি তাঁহার প্রাসাদে প্রবেশ করিবার অনুমতি পাইয়াছি। আমার জন্য প্রাসাদদ্বার উদ্ঘাটিত হইল।

 ঘরদালানগুলা য়ুয়োপীয় ধরণে সজ্জিত; সর্ব্বত্রই সোনালী-গিল্টির কাজ, জরির কাজ ও ঝাড়-লণ্ঠন। মনে হয়, যেন Palais-Bourbon-প্রসাদে কিংবা Elysce-প্রাসাদে আসিয়া পড়িয়াছি। কিন্তু এই সব দস্তুরমত-