প্রবেশাধিকার নাই। কিন্তু সেই প্রবেশপথের মুখটি এত বড় যে, সেখান হইতে অভ্যন্তরস্থ দেবমণ্ডপের সুদূর পশ্চাদ্ভাগ পর্যন্ত আমার দৃষ্টিগোচর হইতেছে। সেই পবিত্র অন্ধকারের মধ্যে, মন্দিরমণ্ডপের দুই ধারে অসংখ্য রহস্যময় দীপাবলী সারি-সারি সজ্জিত। সেখান হইতে দেখিতে নিষেধ নাই; কিন্তু তাহাও বেশিক্ষণের জন্য কিংবা খুব নিকটে গিয়া দেখা নিষিদ্ধ।
এই সুদূরপ্রসারিত প্রবেশপথের প্রত্যেক দিকে মণ্ডলাকারে-বিন্যস্ত স্তম্ভশ্রেণীর নিম্নে, ছোট-ঘোট মশালের আলোকে, দেবতাদের ব্যবহারের জন্য ফুলের দোকান, মালার দোকান, মিষ্টান্নের দোকান বসিয়াছে। এই মশালের আলোকে, দোকানদারদিগকে এবং মন্দিরের প্রস্তরময় তলদেশটি বেশ দেখিতে পাওয়া যাইতেছে। সেই প্রস্তরে বিকটাকার বিবিধ মূর্ত্তি, অদ্ভুতকার জীবজন্তুর মূর্তি খোদিত, কিন্তু সেই মূর্তিগুলি ক্ষয়গ্রস্ত ও বিলুপ্তমুখশ্রী। ঐ সকল দোকানদারেরাও দেবমূর্ত্তিবৎ অচল। উহাদের শ্যামল নগ্নগাত্র ঐ সকল লাল পাথরের উপর ঠেস দিয়া রহিয়াছে; নেত্রগুলি জলজল করিতেছে; এবং উহাদের রমণীসুলভ সুদীর্ঘ কৃষ্ণ কেশগুচ্ছ স্কন্ধের উপর লইয়া পড়িয়াছে। উপরে থামগুলির মাথায়, খিলানমণ্ডলের সমীপবর্ত্তী স্থানে অন্ধকার একাধিপত্য করিতেছে।
মণ্ডপের সুদূর পশ্চাদ্ভাগ পর্যন্ত আমি অলক্ষিতভাবে এখান হইতে সমস্ত দেখিতেছি। অফুরন্ত সারি সারি স্তম্ভ অস্পষ্টরূপে উপলব্ধি হইতেছে। ক্ষীণপ্রভ দীপাবলী ঘনঘোর অন্ধকারের মধ্যে কোথায় যেন হারাইয়া গিয়াছে। সুদূর প্রান্তে শুভ্রবসন মনুষ্যমূর্ত্তিসকল বিশৃঙ্খলভাবে চলাফেরা করিতেছে। এবং ঐ স্থানটি স্তুতিপাঠে ও গানকীর্তনে মুহুর্মুহু অনুরণিত হইতেছে।
যে নিষিদ্ধ দ্বার দিয়া আমি লুকাইয়া দেখিতেছি, তাহার গঠন অতি অপূর্ব;একেবারেই বাস্তুবিদ্যার অপরিজ্ঞাত। দ্বারের প্রকোষ্টটি খুব