কথা পাড়িলাম—যিনি তাঁহারই পূর্ব্বে এখানে আসিয়াছিলেন, যিনি এই তত্ত্বজ্ঞানী সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘকাল অতিবাহিত করিয়াছিলেন এবং যাঁহার প্রখ্যাত গ্রন্থাদি পাঠ করিয়াই আমি স্বধর্ম্মে সন্দিহান হইয়াছিলাম। আমি ইঁহার কাছে কথাটা এইজন্য পাড়িলাম, কেন না, আমি শুনিয়াছিলাম, ইহারও ধ্রুববিশ্বাস,—তিনি বুজ্রুকি দেখাইয়া প্রবঞ্চনা করিতেন। আমি তাঁকে বলিলাম—“আপনি কি মনে করেন না, কাহারও কোন বিষয়ে হৃদ্বোধ করাইবার জন্য যদি বুজ্রুকি দেখান হয়, তাহা মার্জ্জনীয়?”
অকপটদৃষ্টিতে আমার মুখের দিকে চাহিয়া তিনি উত্তর করিলেন—“প্রতারণা-প্রবঞ্চনা কোন অবস্থাতেই মার্জ্জনীয় নহে; মিথ্যা-কথা হইতে কখনই ভাল ফল উৎপন্ন হয় না।”
এই কথায়, আমার দীক্ষাগুরুর প্রতি আমার সহসা বিশ্বাস জন্মিল। মুহূর্ত্ত পরেই তিনি আবার বলিলেন—“আমাদের বিশেষ ধর্ম্মমত কি?...আমাদের কোন বিশেষ ধর্ম্মমত নাই। আমাদের ‘থিয়সফিষ্ট’ সম্প্রদায়ের মধ্যে (লোকে এই নামে আমাদিগকে অভিহিত করে) বৌদ্ধ আছে, হিন্দু আছে, মুসলমান আছে, ক্যাথলিক্ আছে, পুরাতন সম্প্রদায়ের গোঁড়া লোক আছে, এমন কি, তোমার ধরণের লোকও আছে। আমাদের দলভুক্ত হ’তে তোমার যদি ইচ্ছা হয়...”
—“আপনাদের দলভুক্ত হইতে হইলে কি করা আবশ্যক?”
“শুধু এই শপথ করিতে হইবে,—জাতি ও বর্ণনির্ব্বিশেষে আমি সকল
উপস্থিত হইয়াছিল যে, কোন কোন লোককে বুজরুকি দেখাইয়াও তিনি আপনার দলে আনিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন। কিন্তু তাঁহার এই মানবোচিত চিত্তদৌর্ব্বল্যসত্ত্বেও, তত্ত্বপ্রকাশক বলিয়া তাঁহার যে খ্যাতি, তাহার কিছুমাত্র লাঘব হয় না। যে তত্ত্বজ্ঞান পৃথিবীর মত পুরাতন, যাহা ব্যক্তিবিশেষের উপর নির্ভর করে না, তাহার সহিত শ্রীমতীর নাম বিশেষরূপে জড়িত করা ভারী ভুল।