বলেচে। আপনাদের দেবে না, গয়ামেমকে দেবে পনেরো বিঘে।
—অ্যাঁ, বলিস কি?
—সে পাবে না তো কি আপনি পাবা? সে হোলো পেয়ারের লোক সায়েবের।
ঠিক দুদিন পরে দেওয়ান হরকালী সুর পরোয়ানা পেলেন বড় সাহেবের-গয়ামেমের জমি আমীনকে দিয়ে ম্যাপিয়ে দিতে। আমীনকে ডাকিয়ে বলে দিলেন। গয়ামেম নিজের চোখে গিয়ে জমি দেখে নেবে।
—কোন্ জমি থেকে দেওয়া হবে?
—বেলেডাঙার আঠারো নম্বর থাক নক্সা দেখুন। ধানী জমি কতটা আছে আগে ঠিক করুন।
— সেখানে মাত্র পাঁচ বিঘে ধানের জমি আছে দেওয়ানজি। আমি বলি ছুতোরঘাটার কোল থেকে নতিডাঙার কাঠের পুল পজ্জন্ত যে টুকরো আছে, শশী মুচির বাজেয়াপ্তী জমির দরুন-তাতে জলি ধান খুব ভালো হয়। সেটা ও যদি নেয়-
হরকালী সুর চোখ টিপে বললেন-আঃ, চুপ করুন!
—কেন বাবু?
—খাসির মাথার মত জমি সায়েব এর পরে খাবে কি? নীলকুঠি তো উঠে গেল। ও জমিতি ষোল মণ আঠারো মণ উড়ি ধানের ফলন। সায়েব খাসখামারে চাষ করবে এর পরে। গয়াকে দেবার দায় পড়েছে আমাদের। না হয়, এর পর আপনি আর আমি ও জমি রাখবো।
হায় মূর্থ বৈষয়িক হরকালী সুর, প্রণয়ের গতি কি ক’রে বুঝবে তুমি? তার পরদিনই নিমগাছের তলায় দুপুরবেলায় অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থেকে প্রসন্ন চক্কত্তি গয়ামেমের সাক্ষাৎ পেলে। গায়া কোনো দিন সাহেবের বাংলায় ভাত খায় না।—খাওয়ার সময় নিজেদের বাড়িতে মায়ের কাছে গিয়ে খায়। আর একটা কথা, রাত্রে সে কখনো সাহেবের বাংলায় কাটায় নি, বরদা নিজে আলো ধরে মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যায়।
২৫৯