—কি দরকার?
—কাল রাত্তিরি একটা খারাপ স্বপ্ন দ্যাখলাম তোর ছেলেডার বিষয়ে, নারায়ণ বাড়ি আছে? তাকে ডাক দে।
একটু পরে নারাণ সর্দার এল থেলো হুঁকোয় তামাক টানতে টানতে। এই নারাণ সর্দারই রাজারাম রায়কে খুন করবার প্রধান পাণ্ডা ছিল সেবার।
দেখতে দুধর্ষ চেহারা, যেমনি জোয়ান, তেমনি লম্বা। এ গ্রামের মোড়ল।
নীলমণি বললেন -এসো নারায়ণ। একটি খারাপ স্বপ্ন দেখে তোমাদের কাছে এ্যলাম। তোমাদের আপন বলে ভাবি, পর বলে তো কখনো ভাবি নি। স্বপ্নটা হারুর ছেলে বাদলের সম্বন্ধে। যেন দ্যাখলাম –
এই পর্যন্ত বলেই যেন হঠাৎ থেমে গেলেন।
হারু ও নারাণ সমস্বরে উদ্যোগের সুরে বললেন-কি দ্যাখলেন!
—সে আর শুনে দরকার নেই। আজ আবার অমাবস্যে শুক্কুরবার। ওরে বাবা! বলেছে, তদধং কৃষি কর্মণি। সব্বনাশ। সে চলবে না।
নারাই গ্রামের সর্দার, গ্রামের বুদ্ধিমান বলে গণ্য। সে এগিয়ে এসে বললে -তাহলি এর বিহিত কি খুড়োমশাই?
নীলমণি মাথা নেড়ে বললেন—আরে সেইজন্য তো আসা। তোমরা তো পর নও। নিতান্ত আপন বলে ভেবে এলাম চেরডা কাল। আজ কি তার ব্যত্যয় হবে? না বাবা। তেমনি বাপে আমার জম্মো দ্যায় নি-
এই পর্যন্ত বলেই নীলমণি সমাদ্দার আবার চুপ করলেন। নারাণ সর্দার ন্যায় পক্ষেই বলতে পারতো যে, এর মধ্যেই বাপের জন্ম দেওয়ার কথা কেন এসে পড়লে অবান্তরভাবে, কিন্তু সে সব কিছু না বুঝে সে উৎকণ্ঠার সঙ্গে বললে-তাহলি এখন এর বিহিত কত্তি হবে আপনারে। মোদের কথা বাদ দ্যান, মোরা চকিও দেখিনে, কানেও শুনিনে। যা হয় কর আপনি।
নীলমণি বললেন-কিন্তু বড্ড গুরুতর ব্যাপার। বড়ঙ্গ মাতৃসাধন করতি হবে কিনা। আজ কি বার? রও। শুক্কুর, শনি, রবিবারে হোলো দ্বিতীয়ে। শুক্লপক্ষে দ্বিতীয়ে। ঠিক হয়ে গিয়েছে–দাঁড়াও ভেবে দেখি-
৩০০