আমীন প্রসন্ন চক্কত্তির ঘরে এহেন গয়া মেয়ের আবির্ভাব খুবই অপ্রত্যাশিত ঘটনা। প্রসন্ন চক্কত্তি চমকে দাড়িয়ে উঠে বললেন-এই যে গয়া। এসো মা এসো-বসতি দিই কোথায়-
গয়া হেসে বললে—থাক্ খুড়োমশাই-আমি ঝকাঠের ওপর বসচি-তারপর কি বললেন মোর?
—একটা বোতল যোগাড় করে দিতি পারো মা?
—দেখুন দিকি আপনার কাণ্ড। মা গিয়ে মোরে বললে, দাদাঠাকুরকে একটা ভালো বোতল না দিলি নয়। এই দেখুন আমি এনিছি-কেমন ধারা দেখুন তো?
গয়া কাপড়ের মধ্যে থেকে একটা সাদা পেটমোটা বেঁটে বাতল বার করে প্রসন্ন চকত্তির সামনে রাখলো। প্রসন্ন চক্কত্তির ছোট ছোট চোখ দুটো লোভে ও খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। তাড়াতাড়ি হাত বাড়িয়ে বোতলটা ধরে বল্লে-আহা, মা আমার দেখি দেখি-কি ইংরিজী লেখা রয়েছে পড়তে পারিস?
না খুড়োমশাই, ইঞ্জিরি-ফিঞ্জিরি আমরা পড়তি পারিনে।
প্রসন্ন চক্কত্তি গয়ার দিকে প্রশংমান দৃষ্টিতে চাইলে। কিঞ্চিত মুগ্ধ দৃষ্টিতেও বোধ হয়। গয়া মেয়ের সুঠাম যৌবন অনেকেরই কামনার বস্তু। তবে বড্ড উঁচু ডালের ফল, হাতের নাগালে পাওয়া সকলে ভাগ্যে ঘটে কি?
প্রসন্ন চকত্তি বললে-হ্যাঁরে গয়া, সায়েব মেমের নাচের মধ্যি হোল কি? দেখেচিস্ কিছু?
—না খুড়োমশাই। মোরে সেখানে থাকতি দ্যায় না।
—শিপটন সায়েবের মেম নাকি ছোট সাহেবের সঙ্গে নাচে?
—ওদের পোড় কপাল। সবাই সবার মাজা ধরে নাচতি নেগেছে। ঝাঁটা মারুন ওদের মুখি। মুই দেখে লজ্জায় মরে যাই খুড়োমশাই।
—বলিস কি?
—হ্যা খুড়োমশাই, মিথ্যে বলচিনে। আপনি না হয় গিয়ে একটু দেখে আসুন, বড় সায়েবের চাপরাশী নফর মুচি বারান্দায় দাড়িয়ে আছে।