পাতা:ইছামতী - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দুজনেরই হাজত হয়েল।

 —খুব শক্তি আছে তোমাদের দুজনেরই। ভালো কাজে সেটা লাগালে দোষ কি?

 —দোষ কিছু নেই বাবা। হাত নিস্‌পিস্ করে। থাকতি পারিনে।

 চৈতন্যভারতী বললেন—হাত নিস্‌পিস্‌ করুক। যে মনটা তোমাকে ব্যস্ত করে, সেটা সর্বদা সৎকাজে লাগিয়ে রাখো। মন আপনিই ভালো হবে।

 হলা পেকে বসে বসে শুনলে। অঘোর মুচির ওসব ভালো লাগছিল না, সে ভাবছিল তিলু দিদিমণির কাছ থেকে একখানা পাকা কাঁটাল চেয়ে নিয়ে খেতে হবে। এমন সময় নিলু সেখানে এসে ডাকলে—ও সন্ন্যিসি দাদা—

 চৈতন্যভারতী বললেন—কি দিদি?

 —পাকা কলা আর পেঁপে নিয়ে আসবো? ছ্যান্‌ হয়েচে?

 —না হয় নি। তুমি নিয়ে এসো, ওতে কোনো আপত্তি নেই। আচ্ছা এ দেশে ছ্যান্‌ করা বলে কেন?

 —কি বলবে?

 —কিছু বলবে না। তুমি যাও, যশুরে বাঙাল সব কোথাকার! নিয়ে এসো কি খাবার আছে।

 —অমনি বললি আমি কিন্তু আনবে না সেটুকু বলে দিচ্চি, দাদা।

 হলা পেকে দাঁড়িয়ে উঠে বললে—তাহলে মুই রণ-পা পরি?

 সন্ন্যাসী হেসে বললেন—রণ-পা পরে কি হবে?

 —আপনার জন্যি কলা-মূলো সংগেরো ক’রে নিয়ে আসি। নিলু দিদি তো চটে গিয়েচে।

 অঘোর মুচি বললে—মোর জন্যি একখানা পাকা কাঁটাল। ও দিদিমণি, বড্ড খিদে নেগেছে।

 নিলু বললে—যাও বাড়ি গিয়ে বড়দিদি বলে ডাক দিও। বড়দি দেবে এখন।

 —না দিদি, তুমি চলো। বড়দি এখুনি বকবে এমন। গারদ খেটে এসিচি

৮৪