পাতা:ইতিকথার পরের কথা.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করার পর এদের বেশীর ভাগ অবশ্য দাড়িয়েই থাকে-সাহস করে বসে কেবল ব্রাহ্মণ গুরুজনস্থানীয় দু-একজন। নন্দর ডাক্তারি পেশায় কিছুমাত্র ব্যাঘাত, ঘটাতে না চেয়েও শুধু উপস্থিত থাকার জন্যই শুভ নানা গোলমাল সৃষ্টি করে। মনে যার যাই থাক, জগদীশের মত ডাকসাইটে " মস্ত জমিদারের বিলাতফেরত ছেলের অস্তিত্ব উপেক্ষা করার অবাস্তব কল্পনাকে কেউ প্রশ্রয় দেয় না । দু-একজন দেয়। যেমন তালতলার সাতরাদের মেজ ছেলে হরিপদ । সম্প্রতি তার বিয়ে হয়েছে এবং সেদিন রাত্রে তারই বিয়ের বিছানা পেতে জীবনকে শুতে দেওয়া হয়েছিল। সবাই জানে বিয়েটা তার বাপভায়ের একরকম গায়ের জোরে দিয়েছে,-বারতলা স্টেশনটা উড়িয়ে দেবার জন্য বাড়িতে সে কলেরাপটশের পটকা-বোমা তৈরী করতে মেতে গিয়েছিল। অ্যাটম বোমার যুগেও সে ভুইপটকা দিয়ে রেল স্টেশন উড়িয়ে দিয়ে জগতে কীৰ্তি রেখে যাবার স্বপ্ন দ্যাখে ! সিগারেট ফুকতে ফুকতে সে ডিসপেন্সারিতে আসে, শুভকে দেখে মুখ বঁাকায়, সিগারেটে জোরে টান দিয়ে এমন ভাবে ধোয়া ছাড়ে যেন শুভর মুখের উপর ছেড়ে দিতে পারলেই খুশী হত। শুভর কাছেই ধপাস করে বসে। তীক্ষা বেপরোয়া সুরে বলে, পেটের ব্যথাটা কাল বেড়েছিল নন্দদা ! পেটে কি হয়েছে ভাই ? শুভ তার গায়ে-পড়া বেয়াদপি গায়ে মাখে না । সহজ ভাবেই প্রশ্নটা করে । আপনাদের ভেজাল খেয়ে যা হয়-আলসার । মুখ তুলে নির্বিকার দুঃসাহসের ভঙ্গিতে সে চেয়ে থাকে। পেটে আলসার হয়েছে-পেটে আলসার আর বুকে থাইসিস না হয়ে কি রেহাই আছে এই দুর্ভাগা দেশের যুবজনের-হয়েছে হোক! আমি কি মরতে ডরাই ? এ তো তুচ্ছ আলসার ! আবার যেমন প্রৌঢ়বয়সী শশাঙ্ক। খালি পায়ে খালি গায়ে আটহাতি একটি ধুতি পরে কাধে একটি তেলচিােট রোয়-ওঠা শতজীর্ণ রেশমের পাকানো চাদর মোটা দড়ির মত ঝুলিয়ে এদেশের একমাত্র স্বাধীনতা পাওয়া ব্যক্তির মত, 8V