১২ যুগলাঙ্গুরীয় যোগ্য।” রাজা হার লইয়া অমলাকে যথেষ্ট অর্থ দিলেন। হিরন্ময়ী ইহার কিছুই জানিল না । ইহার কিছু দিন পরে পুরন্দরের এক জন পরিচারিকা হিরন্ময়ীর নিকটে আসিল । সে কহিল, “আমার প্রভু বলিয়া পাঠাইলেন যে, আপনি যে পর্ণকুটীরে বাস করেন ইহা র্তাহার সহ হয় না। আপনি তাহার বাল্যকালের সর্থী ; আপনার গৃহ তাহার গৃহ একই। তিনি এমন বলেন না যে, আপনি উাহার গৃহে গিয়া বাস করুন। আপনার পিতৃগৃহ তিনি ধনদাসের মহাজনের নিকট ক্রয় করিয়াছেন। তাহা আপনাকে দান করিতেছেন। আপনি গিয়া সেইখানে বাস করুন, ইহাই উহার ভিক্ষা।” হিরন্ময়ী দারিদ্র্যজন্য যত তুঃখভোগ করিতেছিলেন, তন্মধ্যে পিতৃভবন হইতে নির্ব্বাসনই তাহার সর্ব্বাপেক্ষ গুরুতর বোধ হইত। যেখানে বাল্যক্রীড়া করিয়াছিলেন, যেখানে পিতা মাতার সহবাস করিতেন, যেখানে তাহাদিগের মৃত্যু দেখিয়াছেন, সেখানে যে আর বাস করিতে পান না, এ কষ্ট গুরুতর বোধ হইত। সেই ভবনের কথায় তাহার চক্ষে জল আসিল । তিনি পরিচারিকাকে আশীর্ব্বাদ করিয়া কহিলেন, “এ দান আমার গ্রহণ করা উচিত নহে–কিন্তু আমি এ লোভ সংবরণ করিতে পারিলাম না । তোমার প্রভুর সর্বপ্রকার মঙ্গল হউক।” পরিচারিক প্রণাম করিয়া বিদায় হইল। অমল উপস্থিত ছিল । হিরন্ময়ী তাহাকে বলিলেন, “অমলা, তথায় আমার এক বাস করা যাইতে পারে না। তুমিও তথায় বাস করিবে চল ।” 總 অমলা স্বীকৃত হইল। উভয়ে গিয়া ধনদাসের গৃহে বাস করিতে লাগিলেন । তথাপি অমলাকে সর্ব্বদা পুরন্দরের গৃহে যাইতে হিরন্ময়ী এক দিন নিষেধ করিলেন । । অমল। আর যাইত না । পিতৃগৃহে গমনাবধি হিরন্ময়ী একটা বিষয়ে বড় বিস্মিত হইলেন। এক দিন অমলা কহিল, “তুমি সংসারনির্ব্বাহের জন্ত ব্যস্ত হইও না, বা শারীরিক পরিশ্রম করিও না। রাজবাড়ী আমার কার্য্য হইয়াছে—আর এখন অর্থের অভাব নাই । অতএব আমি সংসার চালাইব—তুমি সংসারে কী হইয়া থাক।” হিরন্ময়ী দেখিলেন, অমলার অর্থের বিলক্ষণ প্রাচুর্য্য। মনে মনে নানা প্রকার সন্দিহান হইলেন । রিটার ইন্দ্রিয় সঞ্চ",
পাতা:ইন্দিরা-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।