视 দশম পরিচ্ছেদ - ఏవ তার পর অন্ত পঞ্চম বৎসর পূর্ণ হইবে জানিয়, তোমার স্বামীকে ডাকাইয়া কহিলাম, “তোমার বিবাহবৃত্তান্ত আমি সমুদায় জানি । তোমার সেই অঙ্গুরীয়টি লইয়া একাদশ দণ্ড রাত্রের সময়ে আসিও । তোমার স্ত্রীর সহিত মিলন হইবে ।’ তিনি কহিলেন যে, ‘মহারাজের ' আজ্ঞা শিরোধার্য্য, কিন্তু বনিতার সহিত মিলনের আমার স্পৃহা নাই। না হইলেই ভাল হয় । আমি কহিলাম, আমার আজ্ঞা । তাহাতে তোমার স্বামী স্বীকৃত হইলেন, কিন্তু কহিলেন যে, “আমার সেই বনিত সচ্চরিত্র কি কুশচরিত্র, তাহ। আপনি জানেন । যদি ফুশচরিত্রা স্ত্রী গ্রহণ করিতে আজ্ঞা করেন, তবে আপনাকে অধর্ম্ম স্পর্শিবে । আমি উত্তর করিলাম, অঙ্গুরীয়টি দিয়া যাও। আমি তোমার স্ত্রীর চরিত্র পরীক্ষা করিয়া গ্রহণ করিতে বলিব।’ তিনি কহিলেন, এ অঙ্গুরীয় অন্তকে বিশ্বাস করিয়া দিতাম না, কিন্তু আপনাকে অবিশ্বাস নাই । আমি অঙ্গুরীয় লইয়া তোমার যে পরীক্ষা করিয়াছি, তাহাতে তুমি জয়ী হইয়াছ । হি। পরীক্ষা ত কিছুই বুঝিতে পারিলাম না । এমন সময়ে রাজপুরে মঙ্গলসূচক ঘোরতর বাছোদ্যম হইয়া উঠিল । রাজা কহিলেন, “রাত্রি একাদশ দণ্ড অতীত হইল-পরীক্ষার কথা পশ্চাৎ বলিব । এক্ষণে তোমার স্বামী আসিয়াছেন ; শুভলগ্নে তাহার সহিত শুভদৃষ্টি কর।” তখন পশ্চাৎ হইতে সেই কক্ষের দ্বার উদঘাটিত হইল। এক জন মহাকায় পুরুষ সেই দ্বারপথে কক্ষমধ্যে প্রবেশ করিল। রাজা কহিলেন, “হিরন্ময়ী, ইনিই তোমার স্বামী ।” হিরন্ময়ী চাহিয়া দেখিলেন–র্তাহার মাথা ঘুরিয়া গেল—জাগ্রৎ স্বপ্নের ভেদজ্ঞানশূন্য। হইলেন। দেখিলেন, পুরন্দর । উভয়ে উভয়কে নিরীক্ষণ করিয়া স্তস্তিত, উন্মত্তপ্রায় হইলেন। কেহই যেন কথা বিশ্বাস করিলেন না । রাজা পুরন্দরকে কহিলেন, “মুহৃৎ, হিরন্ময়ী তোমার যোগ্য পত্নী। আদরে গৃহে লইয়া যাও। ইনি অস্থাপি তোমার প্রতি পূর্ব্ববৎ স্নেহময়ী । আমি দিবারাত্র ইহাকে প্রহরাতে রাখিয়াছিলাম, তাহাতে বিশেষ জানি যে, ইনি অনন্তামুরাগিণী। তোমার ইচ্ছাক্রমে উহার পরীক্ষা করিয়াছি, আমি উহার স্বামী বলিয়া পরিচয় দিয়াছিলাম, কিন্তু রাজ্যলোভেও হিরন্ময়ী লুব্ধ হইয় তোমাকে ভুলেন নাই। আপনাকে হিরন্ময়ীর স্বামী বলিয়া পরিচিত করিয়া ইঙ্গিতে জানাইলাম যে, হিরন্ময়ীকে তোমার প্রতি অসৎপ্রণয়াসক্ত বলিয়া সন্দেহ করি। যদি হিরন্ময়ী তাহাতে ছুঃখিত হইত, ‘আমি নির্দোষী, আমাকে গ্রহণ করুন'
পাতা:ইন্দিরা-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।