দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ খগুরবাড়ী চলিলাম > দেখিতে পাইয়া আমার দ্বারবানের। “কোন স্থায় রে কোন স্থায় রো” প্রবণ্ডুলিয়া छल शहैंटऊ ¢लौक्लिल । - তখন বুঝিলাম যে, আমি দস্থ্যহতে পড়িয়াছি। তখন আর গজায় কি করে ? পান্ধীর উভয় দ্বার মুক্ত করিলাম। আমি লাফাইয়া পড়িয়া পলাইব মনে করিলাম, কিন্তু দেখিলাম যে, আমার সঙ্গের সকল লোক অত্যন্ত কোলাহল করিয়া পাষ্ঠীর পিছনে দৌড়াইল। অতএব ভরসা হইল। কিন্তু শীঘ্রই সে ভরসা দূর হইল। তখন নিকটস্থ অন্যান্ত বৃক্ষ হইতে লাফাইয়া পড়িয়া বহুসংখ্যক দক্ষু দেখা দিতে লাগিল। আমি বলিয়াছি, জলের ধারে বটবৃক্ষের শ্রেণী। সেই সকল বৃক্ষের নীচে দিয়া দস্থ্যরা পান্ধী লইয়। যাইতেছিল। সেইসকল বৃক্ষ হইতে মনুষ্য লাফাইয়া পড়িতে লাগিল। তাহদের কাহারও হাতে বাঁশের লাঠি, কাহারও হাতে গাছের ডাল। লোকসংখ্যা অধিক দেখিয়া আমার সঙ্গের লোকের পিছাইয়া পড়িতে লাগিল । তখন আমি নিতান্ত হতাশ্বাস হইয়া মনে করিলাম, লাফাইয়া পড়ি। কিন্তু বাহকেরা যেরূপ দ্রুতবেগে যাইতেছিল—তাহাতে পান্ধী হইতে নামিলে আঘাতপ্রাপ্তির সম্ভাবনা। বিশেষত: | একজন দসু্য আমাকে লাঠি দেখাইয়া বলিল যে, “নামিবি ত মাথা ভাঙ্গিয়া দিব।” সুতরাং আমি নিরস্ত হইলাম । আমি দেখিতে লাগিলাম যে, একজনস্বারবান অগ্রসর হইয়া আসিয়া পান্ধী ধরিল, তখন একজন দস্থ্য তাহাকে লাঠির আঘাত করিল। সে অচেতন হুইয়া মৃত্তিকাতে পড়িল । তাহাকে আর উঠিতে দেখিলাম না । বোধ হয়, সে আর উঠিল না। ইহ দেখিয়া অবশিষ্ট রক্ষিগণ নিরস্ত হইল। বাহকের আমাকে নির্বিবঙ্গে লইয়া গেল । রাত্রি এক প্রহর পর্য্যন্ত তাহার এইরূপ বহন করিয়া পরিশেষে পান্ধী নামাইল। দেখিলাম, যেখানে নামাইল, সে স্থান নিবিড় বন—অন্ধকার। দস্যরা একটা মশাল জালিল। তখন আমাকে কহিল, “তোমার যাহা কিছু আছে, দাও-নইলে প্রাণে মারিব।” আমার অলঙ্কার বস্ত্রাদি সকল দিলাম—অঙ্গের অলঙ্কারও খুলিয়া দিলাম। কেবল হাতের বালা খুলিয়া দিই নাই —তাহারা কাড়িয়া লইল । তাহার একখানি-মলিন, জীর্ণ বস্ত্র দিল, তাহ পরিয়া পরিধানের বহুমূল্য বস্ত্র ছাড়িয়া দিলাম। দম্বারা আমার সর্বস্ব লইয়া পান্ধী ভাঙ্গিয় রূপাখুলিয়া লইল। পরিশেষে অগ্নি জালিয়া ভগ্ন শিবিক দাহ করিয়া দস্থ্যতার চিহ্নমাত্র লোপ করিল। তখন তাহারাও চলিয়া যায়, সেই নিবিড় অরণ্যে অন্ধকার রাত্রিতে আমাকে বক্টপশুদিগের মুখে সমৰ্পণ করিয়া যায় দেখিয়া আমি কাদিয়া উঠিলাম। আমি কছিলাম, 2
পাতা:ইন্দিরা-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।