ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ ; সুবে। २ं) থেকে ও শ্বশুরবাড়াই থাকে—আমরা কখন দেখিতে পাই না। আমি কালীর্ঘাটে এসেছি শুনে আমাকে একবার দেখা দিতে এসেছে। ওরা বড় মানুষ । বড় মানুষের বাড়ী তুমি কাজকর্ম্ম করিতে পরিবে ত ?” আমি হরমোহন দত্তের মেয়ে, টাকার গদিতে শুইতে চাহিয়াছিলাম—আমি বড় মানুষের বাড়ী কাজ করিতে পারিব ত? আমার চোখে জলও আসিল ; মুখে হাসিও আসিল । তাহা আর কেহ দেখিল না—সুভাষিণী দেখিল । গৃহিণীকে বলিল, “আমি একটু আড়ালে সে সকল কথা ওঁকে বলি গে। যদি উনি রাজি হন, তবে সঙ্গে করিয়া লইয়। যাইব ।” এই বলিয়া সুভাষিণী আমার হাত ধরিয়া টানিয়া একটা ঘরের ভিতর লইয়। গেল। সেখানে কেহ ছিল না। কেবল ছেলেটি মার সঙ্গে সঙ্গে দৌড়াইয়া গেল । একখানা তক্তপোষ পাতা ছিল । সুভাষিণী তাহাতে বসিল—আমাকে হাত ধরিয়া টানিয়া বসাইল । বলিল, “আমার নাম না জিজ্ঞাসা করিতে বলিয়াছি । তোমার নাম কি ভাই ?” “ভাই ।” যদি দাসীপনা করিতে পারি, তবে ইহার কাছে পারি, মনে মনে ইহা ভাবিয়াই ইহার উত্তর করিলাম, “আমার দুইটি নাম—একটি চলিত, একটি অপ্রচলিত । যেটি অপ্রচলিত, তাহাই ইহাদিগকে বলিয়াছি ; কাজেই আপনার কাছে এখন তাহাই বলিব। আমার নাম কুমুদিনী ।” ছেলে বলিল, “কুমুডিনী।” সুভাষিণী বলিল, “আর নাম এখন নাই শুনিলাম, জাতি কায়স্থ বটে ”ি হাসিয়া বলিলাম, “আমরা কায়স্থ ।” স্বভাষিণী বলিল, “কায় মেয়ে, কার বউ, কোথায় বাড়ী, তাহ এখন জিজ্ঞাসা করিব না। এখন যাহা বলিব, তাহ শুন । তুমি বড় মানুষের মেয়ে, তাহ৷ আমি জানিতে পারিয়াছি—তোমার হাতে গলায়, গহনার কালি আজিও রহিয়াছে। তোমাকে দাসীপনা করিতে বলিব না—তুমি কিছু কিছু রাধিতে জান না কি ?” আমি বলিলাম, “জানি। রান্নায় আমি পিত্রালয়ে যশস্বিনী ছিলাম।” সুভাষিণী বলিল, “আমাদের বাড়ীতে আমরা সকলেই রাখি। (মাঝখান থেকে ছেলে বলিল, “ম, আমি দাদি ) তবু, কলিকাতার রেওয়াজমত একটা পাচিকাও আছে। সে মাগীট বাড়ী যাইবে । ( ছেলে বলিল,“ত মা বালী দাই”) এখন মাকে বলিয়া তোমাকে
পাতা:ইন্দিরা-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।