登心 हेनिद्रा আমার মাথায় বজাঘাত হইল। এত আশা ভরসা সব নষ্ট হইল। তবে আমার পরিচয় পাইলে, আমাকে আপন স্ত্রী বলিয়া চিনিলেও, আমাকে গ্রহণ করিবেন না । আমার এবারকার নারীজন্ম বৃথা হইল। সাহস করিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, “যদি এখন তাহার দেখা পান, তবে কি করিবেন ?” তিনি অম্লানবদনে বলিলেন, “তাকে ত্যাগ করিব।” কি নির্দয় । আমি স্তম্ভিত হইয়া রহিলাম। পৃথিবী আমার চক্ষে ঘুরিতে লাগিল । সেই রাত্রিতে আমি স্বামিশয্যায় বসিয়া তাহার অনিন্দিত মোহনমূর্ত্তি দেখিতে দেখিতে প্রতিজ্ঞ করিলাম, “ইনি আমায় স্ত্রী বলিয়া গ্রহণ করিবেন, নচেৎ আমি প্রাণত্যাগ করিব।” 歌 পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ কুলের বাহির তখন সে চিন্তিত ভাব আমার দূর হইল। ইতিপূর্বেই বুঝিতে পারিয়াছিলাম যে, তিনি আমার বশীভূত হইয়াছেন। মনে মনে কহিলাম, যদি গণ্ডারের খড়গ-প্রয়োগে পাপ না থাকে, যদি হস্তীর দন্ত-প্রয়োগে পাপ না থাকে, যদি ব্যান্ত্রের নখব্যবহারে পাপ না থাকে, যদি মহিষের শৃঙ্গাঘাতে পাপ না থাকে, তবে আমারও পাপ হইবে না। জগদীশ্বর , আমাদিগকে যে সকল আয়ুধ দিয়াছেন, উভয়ের মঙ্গলার্থে তাহ প্রয়োগ করিব। যদি ৷ কখন “মল বাজিয়ে” যেতে হয়, তবে সে এখন। আমি তাহার নিকট হইতে দূরে আসিয়া বসিলাম। তার সঙ্গে প্রফুল্প হইয়া কথা কহিতে লাগিলাম। তিনি নিকটে আসিলেন, আমি তাহাকে কহিলাম, “আমার নিকটে আসিবেন না, আপনার একটি ভ্রম জন্মিয়াছে দেখিতেছি,* [ হাসিতে হাসিতে আমি এই কথা বলিলাম এবং বলিতে বলিতে কবরীমোচনপূর্বক (সত্য কথা না বলিলে কে এ ইতিহাস বুঝিতে পারিবে ?) আবার বাধিতে বসিলাম, ? “আপনার একটি ভ্রম জঙ্কিয়াছে। আমি কুলটা নহি। আপনার নিকটে দেশের সংবাদ শুনিব বলিয়াই আসিয়াছি। অসৎ অভিপ্রায় কিছুই নাই।” বোধ হয়, তিনি এ কথা বিশ্বাস করিলেন না। অগ্রসর হইয়া বসিলেন। আমি তখন হাসিতে হাসিতে বলিলাম, “তুমি কথা শুনিলে না, তবে আমি চলিলাম, তোমার সঙ্গে
পাতা:ইন্দিরা-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৬০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।