१९ ইন্দিরা অন্তঃপুরে আসিয়া আমাকে সীল-করা পুলিন্দা দিয়া গেলেন। আমার স্বামীকে সে সম্বন্ধে যে উপদেশ দিয়াছিলেন, আমাকেও সেই উপদেশ দিলেন। শেষ বলিলেন, “সুভাষিণীকে কি বলিব ?” আমি বলিলাম, “বলিবেন, কাল আমি মহেশপুর যাইব । গেলেই আমি শাপ হইতে মুক্ত হইব ।” স্বামী বলিলেন, “আপনাদের এ সব জানা আছে না কি ?” চতুর রমণ বাবু বলিলেন, “আমি সব জানি না, কিন্তু আমার স্ত্রী সুভাষিণী সব জানেন ?? বাহিরে আসিয়া স্বামী মহাশয় রমণ বাবুকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনি ডাকিনী যোগিনী বিদ্যাধরী প্রভৃতি বিশ্বাস করেন ।” রমণ বাবু রহস্যখানা কতক বুঝিয়াছিলেন, বলিলেন, “করি। সুভাষিণী বলেন, কুমুদিনী শাপগ্রস্ত বিদ্যাধরী।” স্বামী বলিলেন, “কুমুদিনী কি ইন্দির, আপনার স্ত্রীকে ভাল করিয়া জিজ্ঞাসা করিবেন।” ● রমণ বাৰু আর দাড়াইলেন না। হাসিতে হাসিতে চলিয়া গেলেন।
বিংশ পরিচ্ছেদ বিদ্যাধরীর অন্তৰ্দ্ধান এইরূপ কথাবার্ত্ত হইলে পর আমরা যথাকালে উভয়ে কলিকাতা হইতে যাত্র। করিলাম। তিনি আমাকে কালাদীঘি নামক সেই হতভাগ্য দীঘি পার করিয়া দিয়া নিজালয়ের অভিমুখে যাত্রা করিলেন। সঙ্গের লোকজন আমাকে মহেশপুর লইয়া গেল। গ্রামের বাহিরে বাহক ও সুক্ষঞ্চদিগকে অবস্থিতি করিতে বলিয়া দিয়। আমি পদত্রজে গ্রামের মধ্যে প্রবেশ করিলাম । পিতার গৃহ সম্মুখে দেখিয়া, এক নির্জন স্থানে বলিয়া অনেক রোম্বন করিলাম। তাহার পর গৃহমধ্যে প্রবেশ করিলাম। সম্মুখেই পিতাকে দেখিয়া প্রণাম করিলাম। তিনি আমাকে চিনিতে পারিয়া জাঙ্কাদে বিশ হইলেন। সে সকল কথা এস্থানে বলিবার অবসর নাই ।