૬છે हेनेिलब्र কামিনী বলিল, “কুমুদিনী কি কে তাহ বলিতে পারি না, একটা স্ত্রীলোক পরশু দিন পান্ধী করিয়া আসিয়াছিল বটে। সে বরাবর মহাভৈরবীর মন্দিরে গিয়া উঠিয়৷ দেবীকে প্রণাম করিল। অমনিই একটা আশ্চর্য্য ব্যাপার উপস্থিত হইল। হঠাৎ মেঘ অন্ধকার হইয়া ঝড়বৃষ্টি হইল। সেই স্ত্রীলোকটা সেই সময় ত্রিশূল হাতে করিয়া জ্বলিতে জলিতে আকাশে উঠিয়া কোথায় চলিয়া গেল।” প্রাণনাথ জলযোগ ত্যাগ করিলেন। হাত ধুইয়া মাথায় হাত দিয়া অনেকক্ষণ বসিয়া রহিলেন ; অনেকক্ষণের পর বলিলেন, “যে স্থান হইতে কুমুদিনী অন্তৰ্দ্ধান করিয়াছে, তাহা দেখিতে পাই না ?” কামিনী বলিল, “পাও বৈকি ? অন্ধকার হয়েছে—আলো নিয়ে আসি ।” এই বলিয়া কামিনী আমাকে ইঙ্গিত করিয়া গেল—“আগে তুই যা। তার পর আলো নিয়ে উপেন্দ্র বাবুকে লইয়া যাইব ।” আমি আগে মন্দিরে গিয়া বারেণ্ডায় বসিয়া রহিলাম । সেইখানে আলো ধরিয়া ( খিড়কী দিয়া পথ আছে বলিয়াছি) কামিনী আমার স্বামীকে আমার কাছে লইয়া আসিল । তিনি আসিয়া আমার পদপ্রাস্তে আছাড়িয়া পড়িলেন। ডাকিলেন, “কুমুদিনী, কুমুদিনী। যদি আসিয়াছ—ত আর আমায় ত্যাগ করিও না।” তিনি বার দুই চারি এই কথা বলার পর, কামিনী চটিয়া উঠিয়া বলিল, “আয় দিদি । উঠে আয়। ও মিন্সে কুমুদিনী চেনে, তোকে চেনে না।” তিনি ব্যগ্র হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “দিদি । দিদি কে ?” কামিনী রাগ করিয়া বলিল, “আমার-দিদি—ইন্দিরে । কখনও নাম শোন নি ?” এই বলিয়া দুষ্ট কামিনী আলোট নিবাইয়া দিয়া আমার হাত ধরিয়া টানিয়া লইয়া আসিল। আমরা খুব ছুটিয়া আসিলাম। তিনি একটু প্রকৃতিস্থ হইলেই আমাদের পিছু পিছু ছুটিলেন। কিন্তু অন্ধকার—পথ অচেনা ; একটা চৌকাট বাধিয়া একটা ছোট রকম জাছাড় খাইলেন। আমরা নিকটেই ছিলাম, দুই জনে দুই দিক্ হইতে হাত ধরিয়া তুলিলাম। কামিনী চুপি চুপি বলিল, “আমরা বিদ্যাধরী—তোমার রক্ষার জন্য সঙ্গে সঙ্গে বেড়াইতেছি।” - এই বলিয়, তাকে টানিয়া আনিয়া আমার শয্যাগৃহে উপস্থিত করিলাম । সেখানে আলো ছিল। তিনি আমাদের দেখিয়া বলিলেন, “এ কি ? এ ত কামিনী, আর এ ত
পাতা:ইন্দিরা-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৭৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।