পাতা:ইন্দিরা - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৭৩).pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
ইন্দিরা।

মাকে একাদশ বৎসরের বালিকা দেখিয়াছিলেন মাত্র। তিনি আমাকে চিনিতে পারিয়াছেন, এমত কোন লক্ষণও দেখি নাই। অতএব তিনি আমাকে পরস্ত্রী জানিয়া যে আমার প্রণয়াশায় লুব্ধ হইলেন, শুনিয়া মনে২ নিন্দা করিলাম। কিন্তু তিনি স্বামী, আমি স্ত্রী—তাঁহার মন্দ ভাবা আমার অকর্ত্তব্য বলিয়া সে কথার আর অলোচনা করিলাম না। মনে২ সঙ্কল্প করিলাম, যদি কখন দিনপাই, তবে এ স্বভাব ত্যাগ করাইব।

 অবস্থিতি করিবার জন্য তাঁহাকে ছল খুঁজিয়া বেড়াইতে হইল না। তিনি কলিকাতায় কারবার আরম্ভ করিয়াছিলেন, সেই জন্য মধ্যে২ কলিকাতায় আসিতেন। রামরাম দত্তের সঙ্গে তাঁহার দেনা পাওনা ছিল। সেই সুত্রেই তাঁহার সঙ্গে নূতন আত্মীয়তা। অপরাহ্নে তিনি হারাণীর কথার স্বীকৃত হইয়া, রামরামের সঙ্গে পুনশ্চ সাক্ষাৎ হইলে বলিলেন, “যদি আসিয়াছি, তবে একবার হিসাবটা দেখিয়া গেলে ভাল হইত।” রামরাম বাবু বলিলেন, “ক্ষতি কি? কিন্তু কাগজ পত্র সব আড়তে আছে, আনিতে পাঠাই। আসিতে রাত্র হইবে। যদি অনুগ্রহ করিয়া কাল প্রাতে একবার পদার্পণ করেন—কিম্বা অদ্য অবস্থিতি করেন, তবেই হইতে পারে।” তিনি