পাতা:ইয়ুরোপে তিন বৎসর.djvu/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইয়ুরোপে তিন বৎসর।

নিরালয় ও অনুর্ব্বরা; একটাও বৃক্ষ কি লতাপল্লব দেখা যায় না। রাত্রি ১১ ঘণ্টার সময় আমরা সুয়েজে উপনীত হইলাম। রজনী অন্ধকারাবৃত, কিন্তু পোতাশ্রয়স্থিত জাহাজ ও ষ্টীমার হইতে বিনির্গত অসংখ্য দীপশিখা আমাদিগের নয়নানন্দদায়িনী হইল। আমরা সুয়েজের নিকট মূলতান ষ্টীমারকে ত্যাগ করিলাম। উক্ত জাহাজ অতীব সুন্দর, উহা দীর্ঘে ২৩২ হস্ত ও প্রস্থে ২৬ হস্ত। উহা জল হইতে ১২ হাত উচ্চ বটে, কিন্তু ঝড়ের সময় সমুদ্রের ঢেউ উহার উপর দিয়া চলিয়া যায়। আমরা অপর এক ষ্টিমারযোগে সুয়েজে পৌঁছিলাম এবং অপরাহ্ণে রেলগাড়িতে আলেকজাণ্ড্রিয়া নগর অভিমুখে চলিলাম। এ মিসরদেশীয় রেল শকট, সুতরাং তাহার সমুদয় বন্দোবস্ত গোলমাল; কেহই বলিতে পারিল না যে কখন গাড়ি ছাড়িবে। আমরা শকট মধ্যে সাধ্যানুসারে সহিষ্ণুতার সহিত কালযাপন করিতে লাগিলাম, গাড়ি আর ছাড়ে না। কখন ডং ডং করিয়া ঘণ্টা বাজে, কিন্তু সে শেষ ঘণ্টা নহে; কখন বংশীধ্বনি শুনা যায়, কখন বা গাড়ি একটু নড়িয়া চড়িয়া থাকে, কিন্তু তখনও ছাড়িবার সময় উপস্থিত হয় নাই। গাড়ির প্রহরীগণ সগর্ব্ব ও গম্ভীরভাবে ইতস্ততঃ যাতায়াত করিতেছে, গাড়ি এক স্থানেই রহিয়াছে, যেন পর্ব্বতের ন্যায় অচল। পরিশেষে প্রায় দেড় ঘণ্টার পর আমাদিগের দুঃখশান্তি করিতে গাড়ি চলিতে লাগিল, এবং আমরাও মহা কুতূহলে আলেকজাণ্ড্রিয়া নগর দর্শনে যাত্রা করিলাম।

 প্রাতে আলেকজাণ্ড্রিয়া নগরের নিকট পৌঁছিয়া মাছিলা নাম্নী স্টিমারে উঠিলাম। কিন্তু উহা পরদিন প্রভাতের পূর্ব্বে