পাতা:ইসলামী ধর্মতত্ত্বঃ এবার ঘরে ফেরার পালা.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ইসলাম ও অংশীবাদ

 আল্লা ছাড়া অন্য কিছুতে বিশ্বাস স্থাপন করা বা অন্য কোন দেবদেবীর জা করার নাম আল্লার অংশী সৃষ্টি করা। যে সব ধর্মে এক আল্লা ছাড়া অন্য দেবদেবীর উপাসনা করা হয় তাকে অংশীবাদী ধর্ম বলে। ইসলাম ভীষণভাবে একেশ্বরবাদী এবং তাই এতে অংশীবাদ গুরুতর পাপ। অংশীবাদী ধর্মে যে সমস্ত দেবদেবীর উপাসনা করা হয় ইসলামী মতে তা সবই নিরর্থক। কারণ ঐ সব দেবদেবীর ভাল বা মন্দ কিছুই করার ক্ষমতা নেই। ভাল বা মন্দ, যা কিছু করার একমাত্র মালিক হলেন আল্লা। আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে আল্লাহ তার মালিক, প্রতিপালক সৃজনকর্তা, উদ্ভাবনকর্তা ও রূপদাতা। আল্লা কখনও মনুষ্য জন্ম গ্রহণ করে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন না। তিনি জনকও নন, জাতকও নন। আল্লাই সর্ব বিষয়ের নির্ভরস্থল। তার সমতুল্য কেউ নেই। তবে আম্লা নিজে মানুষ হিসাবে জন্ম গ্রহণ না করলেও তিনি মানবরূপী রসুল প্রেরণ করেন। তাই রসুল বা নবী বলতে বোঝায় আল্লার বার্তাবহনকারী মানব।

 কাজেই ইসলামের দৃষ্টিতে হিন্দুরা ঘোরতর অংশীবাদী। কারণ তারা অবতারবাদে বিশ্বাসী হয়ে সাধারণ মানুষকে ঈশ্বরজ্ঞানে পূজা করে। ইসলামের নবী বা রসুলরা অবতার নন। আর দশটা মানুষের মতই সাধারণ মানুষ। তবে তফাতশুধু এই যে, আল্প” তাঁবাহক হবার জন্য তাদের কাছে আল্লার ওহী বা প্রত্যাদেশ অবতীর্ণ হয়। ইসলামী মতে আল্লার অংশী থাকলে একাধিক ঈশ্বর থাকত এবং তারা নিজ নিজ সৃষ্টি নিয়ে আলাদা হয়ে যেত এবং একে অপরের উপর প্রভুত্ব বিস্তার করার চেষ্টা করত। ফলে মহা নৈরাজ্য ও অশান্তির সৃষ্টি হত। তাই অংশীবাদীদের সঙ্গে ইসলামের কোন আপস নেই এবং এদের প্রতি কোরানের মনোভাব অত্যন্ত কঠোর। স্বয়ং আল্লাও অংশীবাদীদের শাস্তি দেবার ব্যাপারে অন্যন্ত নির্মম।

 ইসলামের চোখে খ্রীস্টান ও ইহুদীরাও অংশীবাদী কাফের এবং তাদের ধর্মও অংশীবাদী। আগে ইহুদীরা একেশ্বরবাদী ছিল এবং সেই কারণে আন্না তাদের আসমানী কেতাব তওরাৎ দান করেছিলেন। কিন্তু পরে তারা গো-বৎসের পূজা করে আল্লার অংশী সৃষ্টি করে এবং শনিবারে কাজ করে আল্লার সীমা লঙ্ঘন করে: এইভাবে তারা অংশীবাদী কাফেরে পরিণত হয়। কাফের শব্দের আক্ষরিক এ অব এবং তা কুফুর ধাতু (যার অর্থ অবাধ্যতা করা) থেকে উৎপন্ন।