পাতা:ইসলামী ধর্মতত্ত্বঃ এবার ঘরে ফেরার পালা.pdf/৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যবনরাজার প্রতি শ্রীমন্মহাপ্রভুর কৃপা

তবে ওট্রদেশ সীমা প্রভু চলি আইলা
তথা রাজ অধিকারী প্রভুরে মিলিলা॥
দিন দুই চার তেঁহাে করিলা সেবন।
আগে চলিবারে সেই কহে বিবরণ॥
মদ্যপ যবন রাজার আগে অধিকার।
তার ভয়ে পথে কেহ নারে চলিবার॥
সেইকালে যবনের এক অনুচর।
উত্মাি কটক আইল করি বেশান্তর॥
প্রভুর সেই অদ্ভুত চরিত্র দেখিয়া।
হিন্দুচর কহে সেই যবন পাশ গিয়া॥
এক সন্ন্যাসী আইল জগন্নাথ হইতে।
অনেক সিদ্ধ পুরুষ হয় তাহার সহিতে॥
লক্ষ লক্ষ লােক আইসে তাহা দেখিবারে।
তারে দেখি পুনরপি যাইতে নারে ঘরে॥
কহিবার কথা নহে দেখিলে সে জানি।
তাহার প্রভাবে তারে ঈশ্বর করি মানি॥
এতশুনি যবনের মন ফিরি গেল।
আপন বিশ্বাস উড়িয়া স্থানে পাঠাইল॥
বিশ্বাস আসিয়া প্রভুর চরণ বন্দিল।

কৃষ্ণ কৃষ্ণ কহি প্রেমে বিল হইল।।
বিশ্বাস যা তাহারে সকল কহিল।
হিন্দু বেশ ধরি সেই যবন আইল।
দূর হইতে প্রভু দেখি ভুমেতে “ড়িয়া।
দৎ করে অত্র পুলকিত হ্ঞা।
মহাপাত্র আনিল তারে করিয়া সম্মান।
যােড় হাতে প্রভূ আগে লয় হরিনাম।।
অধম যবনকুলে কেন জন্ম হইল।
বিধি মােরে হিন্দুকুলে কেন না জন্মাইল।।
হিন্দু হইলে পাইতাম প্রভুর চরণ সন্নিধান।
ব্যর্থ মাের এই দেহ যাউক পরান।।
গাে-ব্রাহ্মণ বৈষ্ণবে হিংসা করিয়াছি অপার।
সেই পাপ হইতে মাের হউক নিস্তার।।
তবে মহাপ্রভু তারে কৃপাদৃষ্টি করি।
আশ্বাসিয়া কহে তুমি কহ কৃষ্ণ হরি।।
তবে সেই মহাপ্রভুর চরণ বন্দিয়া
সবার চরণ বন্দি চলে হৃষ্ট ইঞা।।

(শ্রীশ্রীচৈতন্যচরিতামৃত, মধ্যলীলা, ১৬ পরিচ্ছেদ)