ঈশাচরিতামৃত। ঈশ্বর এবং তোমার বিরুদ্ধে পাপ করিয়াছি, আমি আর এখন তব পুত্র নামের উপযুক্ত নহি। পিতা তৎক্ষণাৎ ভূত্যকে আদেশ করিলেন যে উৎকৃষ্ট পরিচ্ছদ, অজুরী এবং পাছকা লইয়া আইস এবং পুত্রকে সে সমুদায় পরাইয়া দাও ; আর একটি হৃষ্টপুষ্ট গোবৎস কাটিয়া আমাদের সকলকে খাইতে দাও, তাহা খাইয়া আজ আমরা আমোদ আল্লাদ করি। কেন না আমার এই পুত্র মরিয়া গিয়াছিল, এক্ষণে পুনর্জীবন পাইয়াছে; ইহাকে হারাইয়া ছিলাম, আবার পাইলাম। এই বলিয়া পুরবাসিগণ সকলে হর্ষোৎফুল্ল মনে আহলাদ আমোদ করিতে লাগিল। জ্যেষ্ঠপুত্র ক্ষেত্রে কৰ্ম্ম করিতে গিয়াছিল। বাড়ীর নিকটে পৌঁছিয়া দেখে যে নৃত্য গীতের মহা ধু লাগিয়া গিয়াছে। জনৈক ভূত্যকে কারণ জিজ্ঞাসা করায় সে বলিল, তোমার ভ্রাত নিৰ্ব্বিত্বে বাড়ী ফিরিয়া আপিয়াছেন, সেই জন্য কৰ্ত্ত একট হৃষ্টপুষ্ট গোবৎস মারিতে বলিয়াছেন। জোষ্ঠ তাহা শুনিয়া ক্রোধ এবং অভিমান প্রযুক্ত আর বাড়ীর ভিতর প্রবেশ করিতে পারিল না। অনন্তর পিতা স্থালিয়া তাহাকে অনেক অমুনয় বিনয় করিলেন। অভিমানী পুত্র বলিল, “দেখ, কত বৎসর হইতে আমি তোমার সেবা করিয়া আদিতেছি, কখন কোন দিন একটি আজ্ঞা লঙ্ঘন করি নাই ; তথাপি আমার ভাগ্যে কোন দিন একটা ছাগবৎসও মিলিল না যে আমি পাঁচ জন বন্ধুকে লইয়া আমোদ করি ; কিন্তু তোমার যে পুত্র গণিকাসক্ত হইয়া কত ধন অপচয় করিল সে বাড়ী ফিরিয়া আসিবামাত্র অমনি তাহার জন্য ভূমি হৃষ্টপুষ্ট গোবৎস মারিলে। পিতা বলিলেন, ‘হে পুত্র, তুমি সৰ্ব্বদাই আমার সঙ্গে বাস করিতেছ, যাহা কিছু আমার আছে সকলই তোমার কিন্তু তোমার যে ভাই মরিয়া বঁচিল, নিরুদেশ হইয়। আবার ঘরে ফিরিয়া আসিল তাহার উপলক্ষে আমোদ আহলাদ করা নিতান্ত সঙ্গত।” অপব্যয়ী পুত্রের গল্পে যিনি ঈশ্বরের অনন্ত দয়ার এবং চিরক্ষমার তত্ত্ব বিন্যাস করিয়াছেন তাহার নামে এখন অনন্ত নরক যন্ত্রণার মত প্রচারিত হইয়া থাকে ইহা নিতান্তু পরিতাপের বিষয় । অনন্তর শিষ্যদিগকে দৃষ্টান্ত দ্বারা বলিলেন, “কোন ধনীর একজন ধনীধ্যক্ষ পরিচারক ছিল। প্রভূর সম্পত্তি নষ্ট করিয়া সে অভিযুক্ত হয়। এক দিন প্ৰভু তাহাকে বলিলেন, কিহে তোমার সম্বন্ধে যে কি কথা শুনি
পাতা:ঈশাচরিতামৃত.djvu/৩৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।