পাতা:ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের গ্রন্থাবলী.djvu/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮ঈশ্বরচন্দ্রগুপ্তের গ্রন্থাবলী । নিগুণ ঈশ্বর। কাতর কিঙ্কর আমি, তোমার সন্তান। আমার জনক তুমি, সবার প্রধান। বার বার ডাকিতেছি, কোথ৷ ভগবান। একবার তাহে তুমি, নাহি দাও কাণ । সৰ্ব্বদিকে সৰ্ব্বলোকে, কত কথা কয়। শ্রবণে সে সব রব, প্রবেশন হয়। হায় হায় কব কায়, ঘটিল কি জ্বালা । জগতের পিতা হয়ে, তুমি হলে কালা ! মনে সাধ কথা কই, নিকটে আনিয়া। অধীর হলেম ভেবে, বধির জানিয়া | সে ভাবেতে ডাকি, আমি, মনে লয় যেটা । কাণ, বুজে কান্‌ কর, ভাল নয় সেট। কার কাছে দুঃখ আর, করিব প্রকাশ । কে আর শুনিবে সব, মনের আদাস ? রহিল তোমার এক; কালা পরিবাদ । কেবল এতির দোষে, হইল প্রমাদ ॥ শ্রীতির হইলে দোষ, স্মৃতি কোথা রয় ? দর্শনে কি হবে আর, কিছু ভাল নয় ॥ আবার কি কথা শুনি, প্রকৃতির কাছে। তোমার নয়নে নাকি, দোষ ধরিয়াছে ? শোচনের,দ্বার আর, না হয় মোচন । অন্ধ হয়ে পোড়ে আছ, করিয়া শয়ন ॥ চারিদিকে আপনার, পরিবার ধারা। অনিবার হাহাকার, করিতেছে তারা ॥ তুমি যদি অন্ধ হয়ে, চক্ষু বুজে রবে। “আমাদের দশায় কি, হবে বল তবে ? দৃষ্টিহীন যদি হয়, পিতার নয়ন। স্বতের সন্তাপ তবে, কি করে হরণ ? ত্রিলোকের নেত্র যিনি, নেত্ৰ নাই তার। কে আছে কাহার কাছে দাড়াইব আর ? উঠ উঠ, মিছে কেন, বলি বারে বারে। জেগে যে ঘুমায় তারে, কে জাগাতে পারে ? yo অনুভবে বুঝিলাম, কাণা ভুমি বটে। নতুবা কি আমাদের, দুঃখ এত ঘটে ? দর্শনেতে এত যদি না হইত দোষ। . নিয়ত থাকিত পূর্ণ, সন্তোষের কোষ। আবার কি সৰ্ব্বনাশ, হয়েছ অচল। শুনিয়া আমার শিরে, পড়িছে আচল। হয় দৃপ্ত এই বিশ্ব, যাহার সম্পদ । এমন পদের পতি, হারালেন পদ । চলিবার শক্তি নাকি, কিছু নাই আর ? বিপদ হইলে তুমি, বিপদ আনবি । আপনিই যদি তুমি, পড়েছ বিপদে । তবে আর সস্তানের, কে রাখিলে পদে ? পদে পদে তব পদে, মন যদি রয় ? আপদ বিপদ তবে, এত কেন হয় ? গোপনেতে পদ রাখা, তোমার কি পদ । তা হইলে কিসে আমি, পাব বল পদ ? পিতা হয়ে যদি নাহি, পদে দেহ পদ । তবে আর নাহি দেখি, উদ্ধারের পদ ॥ তোমার যে পদ তাহ, আমারি ত পদ । তবে কেন নাহি দেও, পদের সে গদ । , পদ-দান ভয়ে যদি, না শুনিলে পদ । তবে কেন বোকে মরি, মিছে ছাড়ি পদ ৷ কিন্তু পিতা যে সময়ে ঘটিবে বিপদ । সে সময়ে পাই সেন, বিপদের পদ ॥ শুনিলাম আর এক, কথা ভয়ঙ্কর। । নিজে তুমি ভব-কর কিন্তু নাই কর। এই বিশ্ব, যার করে, বিশ্ব করে যেই । বিশ্বকর বিভু হয়ে, করস্থান সেই ৷ যে শুনিছে, সে হাসিছে, কারে আর কব ? কেমনে বুঝাব আমি, কর নাই তব ॥ বল শুনি সবিশেষ, ওহে গুণাকর। অকর যদ্যপি তুমি, নাহি ধর কর। দিবাকর নিশাকর, দুই করকর। নিয়ত নিয়মে দেয়, কার করে কর ।