পাতা:উনিশে মে- ভাষার সংকট - রণবীর পুরকায়স্থ (২০২১).pdf/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উত্তর-পূর্বের লাজুক বাংলা সাহিত্য উত্তর-পূর্ব ভারতের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস বড়োই জটিল। বেনিয়া বৃটিশ প্রভুত্বের ফাঁসকলে বারবার জড়িয়েছে, কিছু বাংলাভাষী অঞ্চল কিছুতেই ছাড়াতে পারে নি পর-শাসনের নিগড়। বৃটিশ সরকার ব্যবসা আর প্রশাসনের প্রয়োজনে পূর্ব ভারতের বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব ভারতের ভূগোল বদলেছে স্বেচ্ছাচারে। যেমন অধুনা বাংলাদেশের সিলেট বিভাগকে নিয়ে ছেলেখেলা করেছে স্বাধীনতার প্রাক্কালে। গণভোট নামক প্রহসনে সিলেট চলে যায় পাকিস্তানে। তার আগেও হয়েছে দেশভাগের আগেও, কখনও সিলেট চট্টগ্রাম নোয়াখালি গোয়ালপাড়া নিয়ে গড়া হয়েছে রেসিডেন্সি। কখনও আবার শুধু সিলেট গোয়ালপাড়া নিয়ে আসাম। তাই উত্তর-পূর্ব ভারতের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস জানতে হলে প্রথমেই জানতে হবে অধুনা বাংলাদেশের সিলেট বিভাগকে। জানতে হবে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল কিংবা সাবেক আসাম রাজ্যকে। মুসলিম লিগের বৃহৎ পাকিস্তান পরিকল্পনাকে যদি না পোকায় কাটত তাহলে তো আসামও বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত ভারত থেকে। তাই নাকের বদলে নরুণ, তৎকালীন আসাম প্রদেশ কংগ্রেস ঘাটতি অর্থনীতির তত্ত্বে গরিব জেলা সিলেটকে ছেঁটে দিয়ে আসামকে সমৃদ্ধ করতে চাইলেন। নাকি বাঙালির সংখ্যাবৃদ্ধিতে ভীত হয়ে মেনে নিলেন গণভোট মুসলিম লিগকে প্রশাসনিক মদতে জিতিয়ে দেওয়ার শর্ত নিলেন। বৃটিশের তখন তাড়া, তারা কথা দিয়েছে ১৯৪৮ এর জুনের মধ্যে দেশ ছেড়ে চলে যাবে। তাই তাড়াহুড়োর দেশভাগের সঙ্গে গণভোটে সিলেট জেতায় রাজি ছিলেন না রাজরোগাক্রান্ত কয়েদে আজম। মহাত্মাজির বার্ধক্যও সিদ্ধান্ত গ্রহণে অক্ষম ছিল সেই মুহূর্তে। সিলেট গণভোট আবার দ্বিখণ্ডিত করে দিল সিলেটের বাঙালিকে। প্রায় আধাআধির হিন্দু বাঙালি পরবাসে চলে এলেন পাশ্ববর্তী কাছাড় জেলায় এবং ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায়। সিলেট গণভোট থেকে আসাম নামক রাজনৈতিক ভূভাগের বসতকারদের যন্ত্রণার শুরু। পরবর্তী কালের বঙ্গাল খেদা বিদেশি হঠাও আলফা আন্দোলনের বিষ বীজ রোপিত হয়। সিলেট পাকিস্তানে চলে যাওয়ায় সংলগ্ন যে অংশটা থেকে গেল আসাম ত্রিপুরার গায়ে সেই অংশটা কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল রাষ্ট্রসীমা থেকে। আবার রাতারাতি হাইলাকান্দি পাথারকান্দি এবং করিমগঞ্জ মহকুমার অর্দ্ধেক ফিরিয়ে দেওয়া হয় ত্রিপুরা রাজ্যের বন্দীদশা মুক্ত করতে। একটি জটিল ভূগোলের অঙ্ক কষতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হল উত্তর পূর্ব ভারতের বাঙালি। শেষ পর্যন্ত ত্রিপুরা ছিটমহল না হলেও তিনদিকে বিদেশ