পাতা:উনিশে মে- ভাষার সংকট - রণবীর পুরকায়স্থ (২০২১).pdf/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হচ্ছে ধারাবাহিক স্রোতের মতো। উনিশে মে : ভাষার সংকট ০ ১১১ উত্তর-পূর্বের ভাষার লড়াই মূলত অসমিয়ার সঙ্গে। আবার প্রীতির সম্পর্কও অসমিয়ার সঙ্গে মধুরতম, বৈবাহিক সম্পর্ক এখন তো স্বাভাবিকতার পর্যায়ে। সাহিত্য সংস্কৃতির জগতে একঝাঁক মুক্তমনা সৃষ্টিশীলের আগমনে এখন সহাবস্থান সহনীয় হচ্ছে দেখে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি সরকারি মদতে দাঁত নখ বের করতে উদ্যত হয়েছে। আবার এক বিতর্কিত ভাষা সার্কুলার বের করে বরাক উপত্যকা সহ আসামের সরকারি ভাষা অসমিয়া করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আবার উত্তপ্ত হবে শান্তির দ্বীপ, উনিশে মে-র বরাক উপত্যকা কিছুতেই মেনে নেবে না আগ্রাসন। যদিও শুভবুদ্ধি জয়ী হবে অচিরেই এ আশায় বুক বেঁধে আছে উত্তর-পূর্ব। প্রকাশনার ক্ষেত্রেও উত্তর-পূর্ব পিছিয়ে ছিল অনেকদিন, বিশেষ করে বাংলা ভাষায় । সাহিত্য বিষয়ক পুস্তক প্রকাশনার ক্ষেত্রেও পিছিয়ে ছিল উত্তর-পূর্ব। প্রতিনিধিত্বমূলক অনেক বইপত্রই এককালে প্রকাশিত হয়েছে কলকাতা থেকে। এই অঞ্চলের স্বনামখ্যাত শিল্পী ময়নুল হক বড়ভূঁইয়ার আঁকা প্রচ্ছদে শিলচরের ঠাকুর প্রেস থেকে প্রকাশিত হয় তপোধীর ভট্টাচার্যর প্রথম গ্রন্থ তথা কাব্যসংকলন তুমি সেই পীড়িত কুসুম'। এর পর সাহিত্য প্রকাশনী থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে থাকে বই। ত্রিপুরায় সরকারি উৎসাহে প্রকাশনার জগতে জোয়ার আসে এবং দুর্দান্ত ভাবে টিকে থাকে দু-একটি। এর মধ্যে অক্ষর পাবলিকেশন এখন বাংলা সাহিত্যের একটি বড়ো প্রকাশনা ঘর। গুয়াহাটিতে তেমন কিছু ছিল না এই সেদিন পর্যন্ত, হল ভিকি পাবলিকেশনের উদয়, যেন এলাম দেখলাম জয় করলাম। শিলচরের পুণ্যপ্রিয় চৌধুরির শিলচর সানগ্রাফিক্স প্রকাশনার উৎকর্ষ দেখিয়ে বের করছে কিছু অসাধারণ বই, শেষতম সংযোজন মলয়কান্তি দের ‘আত্মপরিচয়’। মিতা দাস পুরকায়স্থর প্রকাশনাও এখন দারুণ সচল। সদ্য প্রকাশিত হয়েছে ইমাদউদ্দিন বুলবুলের উপন্যাস 'সুরমা নদীর চোখে জল' ৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কথাসাহিত্যে সমাজ উঠে এসেছে বারবার তার স্ব-স্বরূপে বৈচিত্র্যে। ভিন্ন ভাষার ভিন্ন ধর্মের সেতুবন্ধন গড়ে উঠেছে, অবিশ্বাস ভেঙে সমন্বয়ের প্রেমকাহিনি বিধৃত হয়েছে। অনিয়মিত প্রকাশক গোবিন্দ কংসবনিকের ‘আবাহন' প্রকাশ করল ‘সরাইঘাট একটি প্রেমকাহিনি'। আসাম আন্দোলনের মূলে ছিল বাঙালি বিরোধিতা, কিংবা বলা যায় উল্টো করে বাঙালির বৌদ্ধিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধতাই ছিল মূলে। দেবাশিস তরফদার এই অলীক বিরুদ্ধতার বিরুদ্ধে মানবতার কথা লিখেছেন তাঁর নিজস্ব গদ্যভঙ্গিতে, এক নবীন গদ্যভাষার স্রষ্টা হয়েছেন তিনি, যাঁকে অনেকে সাধুভাষা বলে ভুল করেছেন। এ ভাষা সাধুর ভিতে এক নব্য কথকতার বাচন যা যোগাযোগের কাজ করে আসামে বিভিন্ন উপভাষার বাঙালির সঙ্গে এবং বাংলার খুব কাছের বন্ধু অসমিয়ার সঙ্গেও। অনুবাদের কাজ যথেষ্ট হচ্ছে ত্রিপুরায় বরাক ও ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায়। দিল্লির বিখ্যাত