পাতা:উনিশে মে- ভাষার সংকট - রণবীর পুরকায়স্থ (২০২১).pdf/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উনিশে মে : ভাষার সংকট □ ১২১

ভয়াবহতা নিয়ে উপস্থিত—

 ‘রাইডিং স্কোয়াডের বাইক চলে গেছে অনেকক্ষণ। পুব আকাশ সাফ একদম। কলের ট্যাপে সোঁ সোঁ শব্দ। জল আসবে এখনি। সান্ধ্য আইন হলেও এ-এলাকায় এত কড়াকড়ি নেই। গলিপথে বেরিয়েছে সবাই। রাতের কোলাহল নিয়ে বিতণ্ডা। সবজান্তা চিনু বলছে,

 —উজানী গাঁওর সব কাচা ঘর ছালি’

 বিরক্ত হন মোহন বাবু। বললেন,

 —রাইত্ তুমি কিতা হন-অ আছলায় নি?’

 —না মানে হুনছি আর কি’

 —মাঝ রাইত্ আইয়া তুমারে কে কইয়া গেল?’

 চিনু ঠেলা খায়। মোহনবাবু বললেন,

 —কেনেরে বাবা, আতাল ঝাতাল বকিত্ রায়’

 —না কাকু সত্যি কইয়ার। বংশী কামলা বাড়ির বাগান অইয়া বান্ধর উদিকে গেছিল। হিখানে অ মাইনষে মাত্‌রা।’

 —বাজে কথা। এমন গুজবে কিতা অয় জাননি? গুজবে মিছা আগুন হাচাউ আগুন লাগায়।” (আজান)

 মলয়কান্তি দে বিপর্যস্ত স্বদেশভাবনাকে তার গল্পের বিষয় করেন—

 ‘—কি অর কুটুম। জমিদারের লগে আবার কুটুম্বিতা। শুয়োরের বাইচ্ছা মানুষ নি।

 —যাইরায় যাও। হিন্দুস্থানো গিয়াউ কুনু সুখ পাইবানি। গেলা তো কত উ...’

 বা

 '—তুমি নি আসরাফ আলি?

 - আইজ্ঞা অয়।

 —তুমি তো বাংলাদেশী। কবে আইছো?”

 বা,

 ‘এমনি বিপর্যস্ত অবস্থায় জঙ্গলের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে আসরাফ। আব্দুল জিজ্ঞেস করছে—ও বাবা আমরা দেশে যাবো না? আসরাফ উত্তর দেয় না। এখন যে জায়গাটায় সে দাঁড়িয়ে আছে—সেটা নো ম্যানস্ ল্যাণ্ড। এখানে দাঁড়িয়ে আসরাফ বুঝতে পারছে—পৃথিবীতে কোথাও তার কোনো স্বদেশ নেই। পাকিস্তানে তার স্বদেশ কেড়েছে ইরফান চাচা, হিন্দুস্থানে কাদের মিয়া। স্বদেশ এখন তাদের মুঠোয়। আর আসরাফ? নো ম্যানস ল্যাণ্ডে দাঁড়িয়ে আসরাফ আসলে এখন নো ম্যান—একটা নন এণ্টিটি।’ (আসরাফ আলীর স্বদেশ)

 পরম ভট্টাচার্যের ভাবনায় সাম্প্রদায়িকতার নগ্নরূপ চাবুকের সপাং হয়ে আমাদের বিশ্বাসকে হঠাৎ আঘাত করে।