পাতা:উনিশে মে- ভাষার সংকট - রণবীর পুরকায়স্থ (২০২১).pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বাঙালির সংকট

বাউলামি কথায় কান দিলেই বিপদ। তাদের তো কোনো কাজ নেই ধর্ম নেই মানুষকে উসকে দিলেই হল কথা দিয়ে গান দিয়ে। বাউল রাজারা কী সব স্বপ্নের কথা বলেন যা কোনোদিন সত্যি হবে না, অতীতের সত্য কি ফিরে আসে কখনও । প্রাক্তন সুন্দর বর্তমান হয়ে ফিরবে না কোনোদিন জেনেই হয়তো এমন সুন্দর পদের নির্মাণ, 'আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম, গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান।’ আগে পারলে এমন কী বিপত্তি ঘটল যে দিন হল অবসান! আসলে এখন হয়তো স্বপ্ন-টপ্ন দেখতে চায় না কেউ, অনেক তো দেখা হল। এবার একটু ভালো ভালো নতুন দিন দেখার পালা লণ্ডনের গঙ্গায়, গঙ্গার পারে দেখানোর দিন সাড়ে বত্রিশ ভাজা। খাও আর বাড়ি গিয়ে ঘুমোও। প্রশ্ন-টশ্ন করো না বাপু, প্রাণে মরবে তাহলে বলে দিচ্ছি। করেছিল তো কর্ণাটকে একজন মাস্টারমশাই তার হাল সবাই দেখেছে, ভ্যানিসই হয়ে গেলেন তিনি, আর একজন উত্তরপ্রদেশে কিছুই না করে জবাই হয়ে গেলেন একলা। কয়েকজন কবি সাহিত্যিক সংস্কৃতিকর্মী তাদের মতো করে প্রতিবাদ করায় তাদের কপালেও জুটল দুর্ভোগ। সম্পুরণ সিং নামে এক কলমচি বললেন কবি লেখকদের ওপর রাগ কেন, তাদের তো কোনো অস্ত্রশস্ত্র নেই হাতে কাগজ আর কলম সম্বল। দু'পয়সার পুরস্কারে তাদের লাভ বই ক্ষতি ছিল না সেও তো তারা ফিরিয়ে দিচ্ছে তাহলে কেন রাগ, তাদের সমর্থন করে দু'কথা বলায় এক মহারাজ অভিনেতাকে দেশদ্রোহী বলে দেওয়া হল। কিছুই বলা যাবে না, এ কেমন রাষ্ট্রীয় মৌনতা। রাষ্ট্রপ্রধানও রেগে থাকেন সর্বক্ষণ রাজ্যপ্রধানের মতো, কিন্তু রাজধর্ম পালনে মৌন থাকেন। আগে চোরের মন্ত্রীসভায় থাকব না বলে হেলায় সরে গেলেন একজন এখন চুরির অপবাদে জেলে থেকে একবছর ধরে মন্ত্রীত্ব চালাচ্ছেন সততার মন্ত্রীসভা সদস্য। রাষ্ট্ররাজ্য সব এখন একাকার। এখন আবার মাংসখণ্ড নিয়ে কালোনাটক। প্রতিবেশির সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার জন্য এক নেতাকে কালি মেখে দেওয়া নিয়ে যার শুরু দক্ষিণে মহারাষ্ট্রে উত্তরেও একই কাণ্ড এক বিধায়কের উপর। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী মাংস খাননি, বলেছেন খেতেই পারে, অসহিষ্ণুরা বলছে খেয়ে দেখ গলা কাটব। তো এমতাবস্থায় কলুটোলা দিয়ে হাঁটছিলাম গতসন্ধ্যায়, নাখোদা মসজিদের উল্টোদিকে। হরিণবাড়ির একটি গন্তব্য দেখে আসার ইচ্ছে, কুদ্দুস ভাই এর রোল কাবাবের দোকানটা কেমন আছে দেখে আসার বাসনা, সঙ্গে অন্য কোনো মনোকামনাও হয়তো ছিল। একই আছে গোমাংস বিপণির মাঝখানে সারে সারে শিকে সাজানো সাদা ব্রাউন কমলা এবং সবুজ রঙের ভিন্ননামের কাবাব খণ্ডগুলি।