পাতা:উনিশে মে- ভাষার সংকট - রণবীর পুরকায়স্থ (২০২১).pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উনিশে মে : ভাষার সংকট □ ৫০

দিয়ে লড়তে হবে, লিখতে হবে, একা না পারলে সমবায়ী প্রচেষ্টায় আমরা বলতে পারি যথেষ্ট হয়েছে আর নয়। এত আস্ফালন ভালো নয় রাষ্ট্রশক্তি। ইহুদি হত্যার শাস্তি তো পেতে হয়েছিল হিটলারকে।

 ফ্রানজ কাফকার রূপক অণুগল্প ‘বিফোর দ্য ল’র সারকথাটি এখানে বলে দেওয়া প্রাসঙ্গিক হবে,

 একটা লোক আইনকে জানার জন্য যায় আইনের দরজায় যেমন গিয়েছিল উপনিষদের নচিকেতা। তাকে যেতে দেওয়া হয় না, আটকে রাখা হয় একটেরেতে, তারও একই গোঁ সে জানতে চায়, সে দরজা খুলে ঢুকতে চায়। তাই সে ধর্নায় বসে যায় আর একদিন মারাও যায়। তবে মরার আগে জেনে যায় যে আর কাউকে কোনোদিন আইনের দরজায় ধর্নায় বসতে দেওয়া হবে না বলে দরজাটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কারণ ওটা বানানোই হয়েছিল তার জন্যে।

 রূপক গল্পের নায়ক যুগে যুগে পালটায়। এবার কিন্তু মরার আগে আর মরবে না বাঙালি, আইনের দরজাই পথ দেখাবে আসামের বিপন্ন বাঙালিকে।

 তাই, এগিয়ে যাওয়াই একমাত্র পথ, প্রতিরোধ সম্বল, বিশ্বের এক বিপন্ন কোণঠাসা জনগোষ্ঠী আত্মরক্ষায় নিজস্ব স্বদেশের দাবি করতেই পারে। পৃথক রাজ্য হোক তবে বরাক উপত্যকায়। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় অনুরূপ স্বদেশের তোড়জোড় করারও সময় অতি নিকট এখন। এতদিন তো বিনীত ভাবে বলা হয়েছে আসাম চুক্তি আমরা মানি না। বাঙালিকে বিদেশি তকমা দিয়ে সন্ত্রস্ত করে নির্মূল করার অপচেষ্টা সমূলে উৎপাটিত করতে হবে, এবার হবে গর্জন। উনিশে মের গণজাগরণকে একবার ভয় পেয়েছিল আসামের উদ্ধত রাষ্ট্রশক্তি, সেই মন্ত্র নিয়ে আবার জেগে ওঠার সময় এখন আসামের অখণ্ড বাঙালির।