পাতা:উনিশে মে- ভাষার সংকট - রণবীর পুরকায়স্থ (২০২১).pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উনিশে মে : ভাষার সংকট ৫৪ বিরোধ।’ ‘বাংলা আমার মাতৃভাষা, ঈশান বাংলা মা।' কবি শক্তিপদ ব্রহ্মচারীর এই অবিনশ্বর পদ আমাদের উপত্যকাকে করেছে ঈশান বাংলা'। 'সাহিত্য' সম্পাদক কবি বিজিৎকুমার ভট্টাচার্য বলেছেন 'বাংলার তৃতীয় ভুবন'। যদি ঢাকা কলকাতাকে দুই ভুবন ধরা হয়। নামের তালিকায় সিলেট কিংবা বরাক উপত্যকা কম পড়বে না। 'মাধব মালঞ্চী কন্যা', ‘শোয়াইক গেল যুদ্ধের নাট্যকার প্রথিতযশা বিভাস চক্রবর্তীরও যৌবন কেটেছে সিলেটের দাড়িয়াপাড়ায়। বহুমুখী প্রতিভাধর নাট্যস্বজন খালেদ চৌধুরির আত্মজীবনীর পরতে পরতে সিলেটিভাষা আর সিলেটস্মৃতির সুবাসে ভরপুর। সদ্য একাডেমী পুরস্কার প্রাপ্ত কবি রণজিৎ দাশ এর প্রথম যৌবনের দিনগুলি শিলচর শহরের স্মৃতি ভরপুর। সীমান্তহীন মাসিক ‘আরম্ভ' সম্পাদক বাহারউদ্দিন বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থেকেও উনিশে মে উদযাপনের এক উজ্জ্বল পথিকৃৎ তিনি কলকাতায় বিস্মৃত এক চিত্র পরিচালক ছিলেন বিমল রায় এর সহকারী, প্রথম ছবি পরিচালনা করেই করেন বাজিমাত 'উসনে কহা থা' কান চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ ছবির মনোনয়ন পায়। ‘মুঝে জিনে দো’, তাঁর সফল ছবি। তাঁর নাম মণি ভট্টাচার্য। শিলচরের চন্দ পরিবারের অনেক বিখ্যাতদের একজন অনিল কুমার ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সচিব। বিশ্বভারতীর স্বর্ণযুগের বাংলার অধ্যাপক ছিলেন সিলেটের ভূদেব চৌধুরি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপকার ত্রিগুণা সেনও সিলেট সন্তান। 'আধখানা চাঁদ আটকে আছে টেলিগ্রাফের তারে'র কবি সিলেটের অশোক বিজয় রাহার জন্মশতবর্ষ পেরিয়ে গেল ২০১১য়। মেনে নেওয়া যাক বাংলার মূল ভাষাভুবন থেকে বরাক উপত্যকার ভৌগোলিক দূরত্ব অনেক। সিলেট তো এখন বিদেশবাড়ি। অপরিচয় হতেই পারে। অপরিচয়কে অসম্মানের দুরভিসন্ধিতে বদলে ফেললে অসহায়তা ক্রোধে পর্যবসিত হয়। মা শব্দের অপমান কে-ই বা মেনে নিতে পারে, মাতৃভাষা যে মায়ের ভাষা। বহুল প্রচারিত প্রগতিশীল মাসিক পত্রিকার ফেব্রুয়ারি সংখ্যায় ভাষাদিবস একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে প্রবন্ধ লেখেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী শ্রীকান্তি বিশ্বাস মহাশয়। অবাক করে দিয়ে সেই প্রবন্ধে একুশের সঙ্গে উল্লিখিত হয় উনিশেরও নাম। বরাক উপত্যকা তথা উত্তর-পূর্ব ভারতের নয়নের মণি একাদশ শহিদের নামও ছাপা হয়। একুশে ফেব্রুয়ারির সঙ্গে বরাক উপত্যকার ভাষা আন্দোলনকে জুড়ে দেওয়ার জন্য শহিদের পুণ্যভূমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে পারত, ধন্যবাদ জানাতে পারত যদি তিনি হেলাভরে কিছু মারাত্মক তথ্যগত ত্রুটি না করতেন। শহিদের রক্ত যারা আজো ভোলেনি তারা কী করে মেনে নেবে নামের ভুল। এগারোজনের নামে চারটে ভুল। (১) চণ্ডীচরণ সূত্রধর হয়েছে চন্ডীচরণ সূত্রধর (২) কুমুদ দাশ হয়েছে কুমুদরঞ্জন দাশ (৩) বীরেন্দ্র সূত্রধর হয়েছে নীরেন্দ্র সূত্রধর (৪) হীতেশ বিশ্বাস হয়েছে জীতেন বিশ্বাস। বরাক উপত্যকার কিন্তু