পাতা:উপনিষৎ গ্রন্থাবলী - প্রথম ভাগ.djvu/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

So & কঠোপনিষৎ \ উপনিষদ মানে ব্রহ্মবিদ্যা । ব্রহ্মবিদ্যা হইতেছে সেই বিদ্যা যে বিষ্ঠা মনুষ্যকে ব্রহ্মপ্রাপ্ত করাইয় দেয়। “বৃহত্বাং, বৃহনত্বাং আত্মা ব্রহ্মেতি গীয়তে।’ আত্মা বা “আমি’র প্রকৃত স্বরূপ হইতেছে ব্ৰহ্ম বা বৃহৎ, ভূম । বাহা দেশ, কাল এবং বস্তুদ্বারা পরিচ্ছিন্ন নয়, যাহাতে স্বগত, সজাতীয়, বিজাতীয় ভেদ নাই, সেই সৎস্বরূপ, চৈতন্ত স্বরূপ, অনন্ত অর্থগুৈকরস বস্তুই ব্ৰহ্ম | আত্মার প্রকৃত স্বরূপ ব্রহ্ম, উপনিষদের প্রতিপাদ্য বিষয় হইতেছে ব্ৰহ্মাত্মৈক জ্ঞান। উপনিষদ বা ব্রহ্মবিদ্যা সংসার বন্ধন শিথিল করিয়া দেয়, স্বরূপ সম্বন্ধীয় অজ্ঞান সম্পূর্ণরূপে দূরীভূত করিয়া মনুষ্যকে তাহার ব্রহ্মস্বরূপ প্রাপ্ত করাইয় দেয়। এই ব্রহ্মবিষ্ঠা বা উপনিষৎ গুরুশিষ্ণু পরম্পরাক্রমে উপদিষ্ট হইয়া আসিত বলিয়া ইহাকে রহস্তবিদ্যা নামে অভিহিত করা হইত। শিষ্ণুহ্যদয়ে গুরু যে উপায় অবলম্বন করিয়া ব্রহ্মবিদ্যা উদ্বোধিত করিতেন সেই উপায় হইতেছে যজ্ঞ । খুম্বির যজ্ঞকে স্বর্গ বা নিরতিশয় আনন্দপ্রাপ্তির সোপান বলিয়া অভিহিত করিতেন । “দীক্ষণীয়” যজ্ঞ দ্বারা শিয়ের অন্ত:শরীরে গুৰু চৈতন্যজ্যোতি: বা অগ্নির উদ্বোধন করিয়া দিতেন । তৎপরে ‘প্রায়ণীয়’ বজ্ঞদ্বারা শিষ্যকে প্রাণায়াম, হোম বা আত্মনিবেদন, ধ্যান শিক্ষা দিতেন । গুরু কর্তৃক শিক্ষিত ইয়া শিল্প স্বীয় অন্ত:শরীরে স্বল্প, স্বশ্বতত্ত্বসমূহ, গ্রা - তিক সত্যসমূহ, প্রত্যক্ষ করিতে করিতে, অনুভব করতে করতে সাধন পথে অগ্রসর হইতেন । শিমুহৃদয়ে উদ্বোধিত এই অগ্নি বা চৈতন্যজ্যোতি: তাহার স্থল স্বপ্ন দেহদ্বয়ের মলিনতা দূর করিয়, পরমাত্মা পরমেশ্বরকে প্রাপ্ত করাইয়া দিত। এই জন্ত বেদের মন্ত্রভাগ, আরণ্যক উপনিষদে কোথায়ও তর্কের স্থান নাই, কোথায়ও সংশয় নাই । ব্রাহ্মণ ভাগে যে যুক্তিতর্ক আছে তাহাও বেদ-প্রতিপাদ্য সত্য সম্বন্ধে নয়, উহ! শুধু উপায় সম্বন্ধে। গুরুশিষ্ঠ পরম্পরাক্রমে উপদিষ্ট বৈদিক সাধন সম্বন্ধে এবং সেই সাধনাগন্ধ সত্য সম্বন্ধে ঋষিদিগের কোনই সংশয় ছিল ।