পাতা:উপনিষৎ গ্রন্থাবলী - প্রথম ভাগ.djvu/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৪ - কঠোপনিষৎ ব্যাখ্যা অন্তরূপ করিয়াছেন। তাহারা বলেন “প্রাণিগণ মৃত হইলে কেহ বলেন স্থল দেহ হইতে অতিরিক্ত আত্মা (বা আমি) পরলোকে অন্তদেহ ধারণ করে, কেহ বলেন মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সমস্তই শেষ হইয়া যায়। মৃত্যুর পর আত্মা থাকে কিনা তাহাই আপনাকর্তৃক উপদিষ্ট হইয়া আমি জানিতে ইচ্ছা করি। ইহাই আমার তৃতীয় বর। মৃত্যুর পর জীবাত্মা তাহার জ্ঞান ও কর্মের সংস্কার অনুসারে পরলোকে অন্ত দেহ ধারণ করে । এই বিশ্বাসের উপর হিন্দুশাস্ত্র প্রতিষ্ঠিত। ‘স্বৰ্গকাম: অগ্নি হোত্রণ যজেত’ স্বৰ্গকাম ব্যক্তি অগ্নিহোত্র যজ্ঞের অনুষ্ঠান করিবে ইত্যাদি শাস্ত্রীয় বিধিবাক্য হইতে স্পষ্টই বুঝা যায় যে বৈদিক যুগের আর্যগণ পরলোক বিশ্বাসী ছিলেন। সুতরাং নচিকেত নিশ্চয়ই জানিতেন যে মৃত্যুর পর জীবাত্মা পরলোকে গমন করিয়া অন্য দেহ ধারণপূর্বক কৰ্মফল ভোগ করে। নচিকেতা নিজেই বলিয়াছেন. শস্তমিব মৰ্ত্ত: পচাতে শস্তমিবাজায়তে পুন: মরণশীল মনুষ্য শস্তের ন্যায় জীর্ণ হইয়া মৃত্যুমুখে পতিত হয় এবং পুনরায় জন্মগ্রহণ করে। ‘অনন্দ নামতে লোকা; তান স গচ্ছতি তা দদংযে যজমান যজ্ঞে জরাজীর্ণ গাভী সমূহ দক্ষিণস্বরূপে ঋত্বিকগণকে দান করেন তিনি মৃত্যুর পর নিরাননাময় লোকে গমন করেন । নচিকেতা স্বয়ং সশরীর মর্ত্য লোক পরিত্যাগ করিয়া যমলোকে আসিয়াছেন, সুতরাং মৃত্যুর পর যে পঞ্জ লোক আছে তাহা তিনি নিশ্চয়ই জানেন। অতএব মৃত্যুর পর জীবাত্মা থাকে কিংবা মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই সমস্ত শেষ হইয়া যায় এরূপ সংশয় তাহার চিত্তে কখনও উদিত হইতে পারে না । এই জন্য এই শ্লোকের আমরা যেরূপ ব্যাখ্যা করিয়াছি তাহাই সমীচীন বলিয়া মনে হয়। প্রকৃত আত্মতত্ত্ব ‘অহং’ এর যথার্থ স্বরূপ কি তাহাই তৃতীয় বরে যমরাজকে জিজ্ঞাসা করিয়াছেন। আত্মতত্ত্ব, আত্মজ্ঞানই ছবিজ্ঞেয়। যমও . নচিকেতাকে বলিতেছেন—