পাতা:উপনিষৎ গ্রন্থাবলী - প্রথম ভাগ.djvu/১৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬০ কঠোপনিষৎ & আবার কেহ কেহ বলিয়া থাকেন “অহং ভাব বিলয় প্রাপ্ত হইলে কিছুই থাকে না, দীপ নিৰ্ব্বানের স্তায় সব শূন্ত হইয়া যায়। ইহার প্রকৃত তত্ত্ব কি তাহাই আমি জানিতে ইচ্ছা করি। আমার প্রকৃত স্বরূপ কি, আত্মা বা “আমি’র প্রকৃত তত্ত্ব কি তাহাই আমার জিজ্ঞাস্ত : ইহাই আমার তৃতীয় বর। কিন্তু কেহ কেহ এই মন্ত্রের ব্যাখ্যা অন্তরূপ করিয়াছেন। তাহারা বলেন—“প্রাণিগণ মৃত হইলে কেহ বলেন স্থল দেহ হইতে অতিরিক্ত আত্মা ( আমি ) পরলোকে অন্য দেহ ধারণ করে, কেহ বলেন মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সমস্তই শেষ হইয়া যায়। মৃত্যুর পর আত্মা থাকে কিনা তাহাই আপনা কর্তৃক উপদিষ্ট হইয়া আমি জানিতে ইচ্ছা করি। ইহাই আমার তৃতীয় বর। মৃত্যুর পর জীবাত্মা তাহার জ্ঞান ও কৰ্ম্মের সংস্কার অনুসারে পরলোকে অন্ত দেহ ধারণ করে।’ এই বিশ্বাসের উপর হিন্দুশাস্ত্র প্রতিষ্টিত। ‘স্বৰ্গকাম: অগ্নিহোত্রেণ যজেত’ স্বৰ্গকাম ব্যক্তি অগ্নিহোত্র যজ্ঞের অনুষ্ঠান করিবে ইত্যাদি শাস্ত্রীয় বিধিবাক্য হইতে স্পষ্টই বুঝা যায় যে বৈদিক যুগের আর্য্যগণ পরলোক বিশ্বাসী ছিলেন। সুতরাং নচিকেতা নিশ্চয়ই জানিতেন যে মৃত্যুর পর জীবাত্মা পরলোক গমন করিয়া অন্ত দেহ ধারণপূর্বক কৰ্ম্মফল ভোগ করে । নচিকেত নিজেই বলিয়াছেন শস্যমিব মর্ত্য: পচ্যতে শস্তমিবাজায়তে পুনঃ’ । মরনশীল মনুষ্ক শস্তের ন্তায় জীর্ণ হইয়া মৃত্যু মুখে পতিত হয় এবং পুনরায় জন্ম গ্রহণ করে । “আনন্দ নাম তে লোকা; তান স গচ্ছতি তা দদং” যে যজমান যজ্ঞে জরাজীর্ণ গাভীসমূহ দক্ষিণারূপে ঋত্বিকগণকে দান করেন তিনি মৃত্যুর পর নিরানন্দময় লোকে গমন করেন। নচিকেতা স্বয়ং সশরীরে মৰ্ত্তলোক পরিত্যাগ করিয়া যমলোকে আসিয়াছেন সুতরাং মৃত্যুর পর যে পরলোক আছে তাহা তিনি নিশ্চয়ই জানেন। অতএব মৃত্যুর পর জীবাত্মা থাকে কিংবা মৃত্যুর সাথেই সমস্ত শেষ হইয়া যায় {