পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
টুনটুনির বই
১১


টুনটুনি বেগুন গাছে নামছে

তখন টুনটুনি পা উঁচিয়ে তাকে লাথি দেখিয়ে বললে, ‘দূর হ, লক্ষ্মীছাড়ী বিড়ালনী!’ বলেই সে ফুডুক করে উড়ে পালাল।

দুষ্টু বিড়াল দাঁত খিঁচিয়ে লাফিয়ে গাছে উঠে, টুনটুনিকেও ধরতে পারলে না, ছানাও খেতে পেল না। খালি বেগুন কাঁটার খোঁচা খেয়ে নাকাল হয়ে ঘরে ফিরল।


টুনটুনি আর নাপিতের কথা

 টুনটুনি গিয়েছিল বেগুন পাতায় বসে নাচতে। নাচতে-নাচতে খেল বেগুন কাঁটায় খোঁচা। তাই থেকে তার হল মস্ত বড় ফোঁড়া।

ও মা, কি হবে? এত বড় ফোঁড়া কি করে সারবে?

টুনটুনি একে জিগগেস করে, তাকে জিগগেস করে। সবাই বলরে, ‘ওটা নাপিত দিয়ে কাটিয়ে ফেল।’

তাই টুনটুনি নাপিতের কাছে গিয়ে বললে, নাপিতদাদা, নাপিতদাদা, আমার ফোঁড়াটা কেটে দাও না!’

নাপিত তার কথা শুনে ঘাড় বেঁকিয়ে নাক সিটকিয়ে বললে, “ঈস্‌! আমি রাজাকে কামাই, দেখি তোর ফোঁড়া কাটতে গেলুম আর কি!’

টুনটুনি বললে, ‘আচ্ছা দেখতে পাবে এখন, ফোঁড়া কাটতে যাও কি না।’

বলে সে রাজার কাছে নালিশ করলে, ‘রাজামশাই, আপনার নাপিত কেন আমার ফোঁড়া কেটে দিচ্ছে না? ওকে সাজা দিতে হবে!’

শুনে রাজামশাই হো হো করে হাসলেন, বিছানায় গড়াগড়ি দিলেন, নাপিতকে কিছু বললেন না। তাতে টুনটুনির ভারি রাগ হল। ইঁদুরের কাছে গিয়ে বললে, ‘ইঁদুরভাই, ইঁদুরভাই, বাড়ি আছ?’

ইঁদুর বললে, ‘কে ভাই? টুনিভাই? এস ভাই! বস ভাই! খাট পেতে দি, ভাত বেড়ে দি, খাবে ভাই?’

টুনটুনি বললে, ‘তবে ভাত খাই, যদি এক কাজ করে।’