পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছেলেদের রামায়ণ )\రి সে হতভাগী হা করিয়া সীতাকে খাইতে গেল। এত বাড়াবাড়ি করিলে কে সহ্য করিতে পারে? কাজেই তখন লক্ষ্মণ খড়গ দিয়া তাহার নাক আর কান কাটিয়া দিলেন। সেই রক্তমাখা নাক কান লইয়া, রাক্ষসী হাত তুলিয়া চাঁচাইতে চ্যাচাইতে বনের ভিতর ঢুকিয়া গেল। কাছেই জনস্থান বলিয়া একটা জায়গা। সেখানে সূৰ্পণখার আর এক ভাই থাকে, নাহার নাম খর। সূৰ্পণখা কাটা নাক কান লইয়া, সেই খরের সম্মুখে গিয়া আছড়াইয়া পড়িল। ভগ্নীর নাক কান কাটা দেখিয়া খর রাগে কাপিতে কঁাপিতে বলিল, “একি সর্বনাশ! হায় হায়! কিসে তোমার এইরূপ হইল ? তুমি কেমন লেন- -o-, -- fo সুন্দর ছিলে! যমের মত তোমার “A roo ভয়ানক চেহারা, আর গর্তপানা চোখ ছিল! কোন দুষ্ট তোমার এমন দশা করিল, শীঘ্ৰ বল! তাহাকে এখনি উচিত সাজা দিতেছি!’ সূপণখা কাদিতে কাদিতে বলিল, দশরথ রাজার দুটা ছেলে আসিয়াছে, তাহদের নাম রাম আব লক্ষ্মণ। তাহাবাই আমার এই দশা করিযাছে। আমার কোন দোষ নাই দাদা! আজ আমাকে তাহদের রক্ত আনিয়া খাইতে দিতে হইবে।” এই কথা শুনিয়া খর তখনই চৌদ্দটা রাক্ষসকে হুকুম দিল, ‘তোমরা এখনই সেই তিনটা মানুষকে মারিয়া নিয়া আইস, সূৰ্পণখা তাহদের রক্ত খাইবেন। সেই হুকুম পাওয়ামাত্রই চৌদ্দটা রাক্ষস অস্ত্রশস্ত্র লইয়া ছুটিল। সুপণখা তাহদের সঙ্গে গিয়া রাম লক্ষ্মণকে দেখাইয়া দিল। এদিকে রামও সীতাকে লক্ষ্মণের নিকট রাখিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। চৌদ্দটা রাক্ষস বিষম রাগে তাহার উপর চৌদ্দটা শূল ছুড়য়া মারিল। রাম চৌদ্দ বাণে সেই চৌদ্দটা শূলকে কাটিয়া, নারাচ অস্ত্রে একেবারে রাক্ষসদিগেব বুক ফুটা করিয়া দিলেন। সে অস্ত্র তাহদের পিঠ দিয়া বাহির হইয়া, মাটির ভিতরে অবধি চুকিয়া গেল। তাহা দেখিয়া সূৰ্পণখাও তাড়াতাড়ি ছুটিয়া পালাইল। সূৰ্পণখাকে আবার ছুটয়া আসিতে দেখিয়া খন বলিল, আবার কি হইয়াছে? তোমার সঙ্গে যাহারা গিয়াছিল, তাহারা কি সেই মানুষ তিনটাকে মারিতে পারে নাই? সূৰ্পণখা বলিল, না, রামই তাহাদিগকে মারিয়া ফেলিয়াছে। তুমি নিজে চল। এই বলিয়া সে পেট চাপড়াইয়া, চুল ছিড়িয়া, ঘোরতর শব্দে কঁদিতে লাগিল। তখন খর নিজেই তাহার ভাই দূষণকে লইয়া রথে চড়িয়া যুদ্ধ করিতে চলিল। চৌদ্দ উপেন্দ্ৰ—১৫