পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
টুনটুনির বই
১৩


হাতি আর টুনটুনি

টুনটুনি বললে, ‘তবে ভাত খাই, যদি সাগরের জল সব খেয়ে ফেল।’

হাতি বললে, ‘অত জল খেতে পারব না, আমার পেট ফেটে যাবে।’

কেউ তার কথা শুনল না দেখে টুনটুনি শেষে মশার কাছে গেল। মশা দূর থেকে তাকে দেখেই বললে, ‘কে ভাই? টুনিভাই? এস ভাই! বস ভাই! খাট পেতে দি, ভাত বেড়ে দি, খাবে ভাই?’

টুনটুনি বললে, ‘তবে ভাত খাই, যদি হাতিকে কামড়াও।’

মশা বললে, ‘সে আবার একটা কথা! এখুনি যাচ্ছি! দেখব হাতি বেটার কত শক্ত চামড়া!’ বলে, সে সকল দেশের সকল মশাকে ডেকে বললে, ‘তোরা আয় তো রে ভাই, দেখি হাতি বেটার কত শক্ত চামড়া! অমনি পীন্-পীন্-পীন্-পীন্ করে যত রাজ্যের মশা, বাপ বেটা ভাই বন্ধু মিলে হাতিকে কামড়াতে চলল। মশায় আকাশ ছেয়ে গেল, সূর্য ঢেকে গেল। তাদের পাখার হাওয়ায় ঝড় বইতে লাগল। পীন্-পীন্-পীন্-পীন্ ভয়ানক শব্দ শুনে সকলের প্রাণ কেঁপে উঠল। তখন—

হাতি বলে, সাগর শুষি।
সাগর বলে, আগুন নেবাই!
আগুন বলে, লাঠি পোড়াই!
লাঠি বলে, বিড়াল ঠেঙাই!
বিড়াল বলে, ইঁদুর মারি।
ইঁদুর বলে, রাজার ভুঁড়ি কাটি!
রাজা বলে, নাপতে বেটার মাথা কাটি!

নাপিত হাত জোড় করে কাঁপতে কাঁপতে বললে, ‘রক্ষে কর, টুনিদাদা! এস তোমার ফোঁড়া কাটি।’

তারপর টুনটুনির ফোঁড়া সেরে গেল, আর সে ভারি খুশি হয়ে আবার গিয়ে নাচতে আর গাইতে লাগল-টুনটুনা টুন্ টুন্ টুন্! ধেই ধেই!