ঘাস খেল।
খেয়ে তার পেট এমনি ভারি হল যে, সে আর চলতে পারে না।
বাঘ শিয়ালকে সুদ্ধ নিয়ে পালাচ্ছে
কিন্তুু ছাগলছানা কি করে বাড়ি যাবে? সে চলতেই পারে না।
তাই সে বললে, ‘তুমি যাও, আমি কাল যাব’।
তখন ষাঁড় চলে গেল। ছাগলছানা একটি গর্ত দেখতে পেয়ে তার ভিতরে ঢুকে রইল।
সেই গর্তটা ছিল এক শিয়ালের। সে তার মামা বাঘের বাড়ি নিমন্ত্রণ খেতে গিয়েছিল। অনেক রাত্রে ফিরে এসে দেখে, তার গর্তের ভিতর কি রকম একটা জন্তু ঢুকে রয়েছে। ছাগলছানাটা কালো ছিল, তাই শিয়াল অন্ধকারের ভিতর ভালো করে দেখতে পেল না। সে ভাবল, বুঝি রাক্ষস-টাক্ষস হবে। এই মনে করে সে ভয়ে-ভয়ে জিগগেস করল, ‘গর্তের ভিতর কে ও?’
ছাগলছানাটা ভারি বুদ্ধিমান ছিল, সে বললে—
‘লম্বা লম্বা দাড়ি
ঘন ঘন নাড়ি।
সিংহের মামা আমি নরহরি দাস
পঞ্চাশ বাঘে মোর এক-এক গ্রাস!’
শুনেই তো শিয়াল ‘বাবা গো!’ বলে সেখান থেকে সে ছুট! এমন ছুট দিল যে একেবারে বাঘের ওখানে গিয়ে তবে সে নিঃশ্বাস ফেললে।
বাঘ তাকে দেখে আশ্চর্য হয়ে জিগগেস করলে, ‘কি ভাগ্নে, এই গেলে, আবার এখুনি এত ব্যস্ত হয়ে ফিরলে যে?’
শিয়ার হাঁপাতে হাঁপাতে বললে, ‘মামা, সর্বনাশ তো হয়েছে, আমার গর্তে এক নরহরি দাস এসেছে। সে বলে কিনা যে পঞ্চাশ বাঘে তার এক গ্রাস!’
তা শুনে বাঘ ভয়ানক রেগে বললে, ‘বটে, তার এত বড় আস্পর্ধা! চলতো ভাগ্নে! তাকে দেখতে কেমন পঞ্চাশ বাঘে যার এক গ্রাস!’
শিয়াল বললে, ‘আমি আর সেখানে যেতে পারব না, আমি সেখানে গেলে যদি সেটা হাঁ করে আমাদের খেতে আসে, তা হলে তুমি তো দুই লাফেই পালাবে। আমি তো তেমন ছুটতে পারব না, আর সে বেটা আমাকেই ধরে খাবে।’
বাঘ বললে, ‘তাও কি হয়? আমি কখনো তোমাকে ফেলে পালাব না।’
শিয়াল বললে, ‘তবে আমাকে তোমার লেজের সঙ্গে বেঁধে নিয়ে চল।’