পাগড়ী এঁটে, চাদর জড়িয়ে ছাতা বগলে করে, শিয়ালমেখে স্নান করতে বলে, রাজার কাছে মেয়ে চাইতে বেরুল।
কানে কলম গুঁজে, পাগড়ি এঁটে, জামা জুতো পরে, চাদর জড়িয়ে, ছাতা বগলে করে, শিয়াল যখন রাজার কাছে উপস্থিত হল, তখন রাজামশাই ভাবলেন, এ খুব পণ্ডিত লোক হবে। তিনি জিগগেস করলেন, ‘কি শিয়াল পণ্ডিত, কি জন্যে এসেছ?’
শিয়াল বললে, ‘মহারাজ, আমাদের রাজার সঙ্গে আপনার মেয়ের বিয়ে দেবেন কি-না, তাই জানতে এসেছি।’
শিয়াল মিছে কথা বলেনি, সেই জোলার নাম ছিল ‘রাজা’। কিন্তুু রাজামশাই মনে করলেন বুঝি সত্যি-সত্যিই রাজা। তিনি ব্যস্ত হয়ে জিগগেস করলেন, ‘তোমাদের রাজা কেমন?’
শিয়াল বললে—
‘দেখতে রাজা বড়ই ভালো
ঘরময় তার চাঁদের আলো।
বুদ্ধি তার আছে যেমন
লেখাপড়া জানে তেমন।
এক ঘায় তার দশটা পড়ে
তার গুণে লোক খায় পরে।’
তার ঘরে চাল ছিল না বলে ভিতরে চাঁদের আলো আসত, তাই শিয়াল বললে, ‘ঘরময় চাঁদের আলো।’ কিন্তু রাজামশাই ভাবলেন, বুঝি সেটা তাঁর নিজের বাড়ির মতন খুব ঝকঝকে জমকালো একটা বাড়ি!
বুদ্ধি তার ছিল না, আর সে লেখাপড়াও জানত না। কাজেই শিয়াল বললে, ‘বুদ্ধি তার আছে যেমন, লেখাপড়া জানে তেমন।’ কিন্তু রাজা ভাবলেন, তার ভারি বুদ্ধি, সে ঢের লেখাপড়া জানে।
‘এক ঘায়, তার দশটা পড়ে,’ এ কথাও সত্যি। দশটা মানুষ নয়, দশটা ধানের গাছ! সে চাষা ছিল, কাস্তে নিয়ে ধান কাটত। রাজামশাই কিন্তু ভাবলেন, সে মস্ত বড় বীর, তার এক ঘায় দশজন মানুষ মরে যায়।
সে ধানের চাষ করত আর কাপড় বুনত। ধান থেকেই তো ভাত হয়, তাই লোকে খায়, আর কাপড় পরে। তাই শিয়াল বললে, ‘তার গুণে লোক খায় পরে।’ রাজামশাই কিন্তু