পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/২২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২৬
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

হওয়া মাত্রই সব ফুরাইয়া যাইত৷

 পাণ্ডবেরা প্রথমে যে বনে বাস করেন, তাহার নাম কাম্যক বন। সেইখানে একদিন বিদুর আসিয়া তাঁহাদের নিকট উপস্থিত হইলেন। দূর হইতে বিদুরকে দেখিয়া যুধিষ্ঠিরের ভয় হইয়াছিল, বুঝি-বা আবার পাশা খেলিবার ডাক আসে। কিন্তু বিদুর সেজন্য আসেন নাই। পাণ্ডবদিগের সহিত বন্ধুতা করার কথা বলাতে, ধৃতরাষ্ট্র রাগিয়া তাঁহাকে বলিয়াছেন, “তুমি এখান হইতে চলিয়া যাও। খালি পাণ্ডবদের হইয়া কথা বল, তোমার মন বড় কুটিল।” তাই বিদুর পাণ্ডবদিগকে খুঁজিতে খুঁজিতে কামাক বনে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছেন।

 এদিকে বিদুর চলিয়া আসাতে ধৃতরাষ্ট্র বড়ই কাতর হইয়া পড়িলেন। বিদুরকে তিনি ভালোবাসিতেন, আর বিদুরের মতন একজন বুদ্ধিমান লোক পাণ্ডবদের দলে গেলে তাঁহাদের বল খুবই বাড়িয়া যাইবে, ইহা ভাবিয়া তাঁহার যথেষ্ট হিংসাও হইয়াছিল। সুতরাং তিনি সঞ্জয়কে ডাকিয়া বলিলেন, “সঞ্জয়! শীঘ্র বিদুরকে ফিরাইয়া আন, নহিলে আমি বাঁচিব না।”

 কাজেই আবার বিদুরকে ফিরাইয়া আসিতে হইল। তাহা দেখিয়া দুর্যোধন বলিলেন, “ঐ দেখ, আপদ আবার আসিয়াছে। বন্ধুসকল! শীঘ্র একটা কিছু কর, নহিলে এ কখন বাবাকে দিয়া পাণ্ডবদিগকে ফিরাইয়া আনে তাহার ঠিক কি!”

 কিন্তু কর্ণের এ কথা পছন্দ হইল না, তাঁহার ইচ্ছা, পাণ্ডবদিগকে এখনই গিয়া মারিয়া আসেন। কারণ, এখন তাঁহাদের দুঃখের অবস্থা, সহায় নাই, আর মনে কষ্ট, কাজেই তেজ কম। এইবেলা তাঁহাদিগকে মারিবার খুব সুবিধা।

দাঁড়াও তোমাকে সাজা দিতেছি

 এ কথায় সকলেই যারপরনাই উৎসাহের সহিত রথ সাজাইয়া মধ্যে হঠাৎ ব্যাসদেব সেখানে আসিয়া তাহাদিগকে থামাইয়া দিলেন।

 এদিকে কাম্যক বনে পাণ্ডবদের কিরূপে দিন যাইতেছে? বনটি বড়ই ভয়ানক। রাক্ষসের ভয়ে মুনি-ঋষিরা সেখান হইতে পলাইয়া গিয়াছেন। পাণ্ডবেরা সেখানে গিয়াই দেখিলেন, ভয়ানক একটা রাক্ষস হাঁ করিয়া তাঁহাদের পথ আগলাইয়া গর্জন করিতেছে। দ্রৌপদী তো তাহাকে দেখিয়াই চক্ষু বুজিয়া প্রায় অজ্ঞান!

 যুধিষ্ঠির রাক্ষসটাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি কে? তোমর কি কাজ করিতে হইবে বল৷” রাক্ষস বলিল, “আরররে মুহি