পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

 তারপর পান্তাবুড়ি পথের ধারে খানিকটা গোবর দেখতে পেলে। গোবর বললে, ‘পান্তাবুড়ি, কোথায় যাচ্ছ?’

 পান্তাবুড়ি বললে, ‘চোরে আমার পান্তাভাত খেয়ে যায়, তাই রাজার কাছে নালিশ করতে যাচ্ছি৷’

 গোবর বললে, ‘ফিরে যাবার সময় আমাকে নিয়ে যেও, তোমার ভালো হবে৷’

 পান্তাবুড়ি বললে, ‘আচ্ছা৷’

 তারপর খানিক দূর গিয়ে পান্তাবুড়ি দেখলে, পথের ধারে একখানা ক্ষুর পড়ে রয়েছে৷

 ক্ষুর বললে, ‘পান্তাবুড়ি, কোথায় যাচ্ছ?’

 পান্তাবুড়ি বললে, ‘চোরে আমার পান্তাভাত খেয়ে যায়, তাই রাজার কাছে নালিশ করতে যাচ্ছি৷’
পান্তাবুড়ি
 ক্ষুর বললে, ‘ফিরে যাবার সময় আমাকে সঙ্গে নিও। তোমার ভালো হবে৷’

 পান্তাবুড়ি বললে, ‘আচ্ছা৷’

 তারপর পান্তাবুড়ি রাজার বাড়ি গিয়ে দেখলে, রাজামশাই বাড়ি নেই। কাজেই সে আর নালিশ করতে পেল না৷

 বাড়ি ফিরবার সময় তার ক্ষুর আর গোবর আর বেল আর শিঙিমাছের কথা মনে হল। সে তাদের সকলকে তার থলেয় করে নিয়ে এল৷

 পান্তাবুড়ি যখন বাড়ির আঙিনায় এসেছে, তখন ক্ষুর তাকে বললে, ‘আমাকে ঘাসের উপর রেখে দাও৷’

 তাই বুড়ি ক্ষুরখানাকে ঘাসের উপর রেখে দিল৷

 তারপর যখন সে ঘরে উঠতে যাচ্ছে, তখন গোবর বললে, ‘আমাকে পিঁড়ির উপর রেখে দাও৷’

 তাই বুড়ি গোবরটাকে পিঁড়ির উপর রেখে দিল৷

 বুড়ি যখন ঘরে ঢুকল, তখন বেল বললে, ‘আমাকে উনুনের ভিতরে রাখ৷’ শুনে বুড়ি তাই করলে।

 শেষে শিঙিমাছ বললে, ‘আমাকে তোমার পান্তাভাতের ভিতরে রাখ৷’ বুড়িও তাই করল৷

 তারপর রাত হলে বুড়ি রান্না-খাওয়া সেরে ঘুমিয়ে রইল৷

 ঢের রাত্রে চোর এসেছে। সে তোর আর জানে না, সেদিন বুড়ি কি ফন্দি করেছে। সে এসেই পান্তাভাতের হাঁড়িতে হাত ঢুকিয়ে দিল। সেখানে ছিল শিঙিমাছ। সে চোর বাছাকে