কিন্ত খালি গাছে উঠলে কি হবে? তা থেকে নামতে পারলে তো হয়। সে হতভাগা বাঘটা সেখান থেকে ছুটে না পালিয়ে গাছতলায় বসে হাঁপাতে লাগল, আর চেঁচিয়ে অন্য বাঘদের ডাকতে লাগল। ডাক শুনে চার-পাঁচটা বাঘ সেখানে এসে বললেম ‘কি হয়েছে তোমার? তোমার চোখ বাঁধলে কে?’
বাঘ হাঁপাতে-হাঁপাতে বললে, ‘আরে ভাই, আজ আর একটু হলেই গিয়েছিলুম আর কি! আমাকে টাগে ধরেছিল। অনেক হাত জোর করে পূজো দেব বলতে তবে ছেড়ে দিয়েছে। সেই বেটা আমার চোখ বেঁধে রেখেছে, পূজো না দিলে আবার এসে ধরবে।’
এই কথা শুনে সব বাঘ মিলে, সেই গাছতলায় টাগের পূজো আরম্ভ করল। বড়-বড় মোষ আর হরিণ নিয়ে দলে-দলে বাঘ আসতে লাগল। জোলা আর অত বাঘ কখনো দেখেনি। সে তো গাছে বসে কেঁপেই অস্থির!
জোলা কাঁপছে আর গাছের পাতা নড়ছে। বাঘেরা তাতে ব্যস্ত হয়ে চেয়ে দেখল, পাতার আড়ালে ছিল বলে জোলাকে চিনতে পারল না।
একজন বললে, ‘ভাই, গাছের ওপর ওটা কি?’
আর একজন বললে, দেখ ভাই, ‘ওটার কি মস্ত লেজ!’
লেজ তো নয়, জোলার কাপড় ঝুলছিল। পাতার জন্য ভালো করে দেখতে না পেয়ে বাঘেরা তাকেই লেজ মনে করছে। সেই লেজ দেখে একটা বুড়ো বাঘ বললে, ‘ওটা একটা খুব ভয়ানক জানোয়ার হবে, হয়তো বা টাগই হবে!’ এই কথা শুনেই তো সব বাঘ মিলে ‘ধরলে, ধরলে! পালা, পালা!’ বলে সেখান থেকে ছুটে পালাল। তখন জোলাও গাছ থেকে নেমে বাড়ি গেল।
জোলাকে দেখে তার ছেলে বললে, ‘কই বাবা, ঘোড়া কই?’
জোলা তার গালে ঠাস করে এক চড় মেরে বললে, ‘এই নে তোর ঘোড়া!’
তারপর থেকে সে-ছেলে আর ঘোড়ার কথা বলত না।