এত সহজে হইবে না। তোমার যে নাতি হইবে, সে মহাদেবকে তপস্যায় তুষ্ট করিয়া, তাহার সাহায্যে, গঙ্গাদেবীকে স্বর্গ হইতে পৃথিবীতে লইয়া আসিবে। সেই স্বর্গের নদী গঙ্গার জল লাগিলে, তোমার খুড়াগণ উদ্ধার পাইবে, ইহাতে সন্দেহ নাই। এখন শীঘ্র ঘোড়া লইয়া দেশে গিয়া যজ্ঞ শেষ কর, তোমার মঙ্গল হউক।”
এইরূপে অংশুমান ঘোড়া লইয়া দেশে ফিরিলে, সগরের অশ্বমেধ শেষ হইল।
অংশুমানের পুত্র দিলীপ, গঙ্গাকে পৃথিবীতে আনার জন্য বিস্তর চেষ্টা করেন, কিন্তু তাহার চেষ্টায় কোন ফল হয় নাই। তারপর তাঁহার পুত্র পরম ধার্মিক এবং সত্যবাদী মহারাজ ভগীরথ জন্মগ্রহণ করিলেন।
বড় হইয়া যখন সগরের পুত্রগণের ভয়ঙ্কর মৃত্যুর কথা শুনিতে পাইলেন, তখন তাঁহার
গঙ্গা ভগীরথকে বলেলেন, “এখন বল বাবা কোন পথে যাইব?”
মনে অতিশয় ক্লেশ হইল। তিনি তখনই এই প্রতিজ্ঞা করিলেন যে, ইহাদিগের উদ্ধারের উপায় করিতে হইবে।
এই ভাবিয়া তিনি মন্ত্রীগণেব? হতে রাজ্যের ভার দিয়া, গঙ্গার তপস্যা করিবার জন্য হিমালয়ে চলিয়া গেলেন। এক হাজার বৎসর তপস্যার পর গঙ্গা তাহাকে দেখা দিয়া বলিলেন, “মহারাজ, তুমি কিসের জন্য এত ক্লেশ করিয়া আমার আরাধনা করিতেছ?” ভগীরথ বলিলেন, “হে দেবি, সগর রাজার ষাট হাজার পুত্র কপিলের কোপে ভস্ম হইয়া গিয়াছেন। তাঁহারা আমার পূর্বপুরুষ। এইরূপে তাঁহাদের মৃত্যু হওয়াতে তাঁহারা স্বর্গে যাইতে পারেন নাই। তাঁহাদের দেহের হই আপনার জলে ভিজিলে তবে তাঁহাদের উদ্ধার হয়। অতএব আপনি কৃপা করিয়া তাঁহাদের উদ্ধারের জন্য পৃথিবীতে আগমন করুন আমার এই প্রার্থনা।”