তার পিঠে উঠতে লাগল।
এমনি করে, বাঘের পিঠে বাঘ উঠে দেখতে-দেখতে তারা প্রায় বুদ্ধুর বাপের সমান উঁচু হয়ে গেল। আর একটু উঁচু হলেই তাকে ধরে ফেলবে!
বুদ্ধুর বাপ বলছে, ‘যা হয় হবে, একবার শেষ এক ঘা মেরেই নি!’ এই বলে সে হাঁড়িটি খুলে হাতে নিয়ে বসেছে- সেই হাঁড়ি সকলের উপরকার বাঘটার মাথায় ভাঙবে।
এমন সময় ভারি একটা মজা হয়েছে। যে গর্তে সেই লেজকাটা বাঘ তার লেজ ঢুকিয়েছিল, সেই গর্তটা ছিল কাঁকড়ার। কাঁকড়া কাটা লেজের গন্ধ পেয়ে, আস্তে-আস্তে এসে তার দুই দাঁড়া দিয়ে তাতে চিমটি লাগিয়েছে। চিমটি খেয়ে বেঁড়ে বাঘ বললে, ‘উঃ হুঃ! ঘেঁয়াও! হাল্লুম! আরে উপরেও বুদ্ধুর বাপ, নীচেও বুদ্ধুর বাপ।’ বলতে বলতেই তো সে লাফিয়ে উঠল আর তার পিঠের বাঘগুলি জড়াজড়ি করে ধুপধাপ শব্দে মাটিতে পড়ে গেল। ঠিক সেই সময়ে বুদ্ধুর বাপও লেজকাটা বাঘের পিঠে হাঁড়ি আছড়ে বললে, ‘ধর্ ধর্ বেঁড়ে বেটার ঘাড়ে ধর্ !’
এর পর কি আর বাঘের দল সেখানে দাঁড়ায়? তারা লেজ গুটিয়ে, কান খাড়া করে, যে যেখান দিয়ে পারল ছুটে পালাল। আর কোনদিন তারা বুদ্ধুর বাপের বাড়ির কাছেও এল না।
বোকা বাঘ
এক রাজার বাড়ির কাছে এক শিয়াল থাকত। রাজার ছাগলের ঘরের পিছনে তার গর্ত ছিল। রাজার ছাগলগুলি খুব সুন্দর আর মোটা-সোটা ছিল।
তাদের দেখলেই শিয়ালের ভারি খেতে ইচ্ছে হত। কিন্ত রাজার রাখালগুলির ভয়ে তাদের কাছে আসতে পারত না।
তখন শিয়াল তার গর্তের ভিতর থেকে খুঁড়তে আরম্ভ করল। খুঁড়ে-খুঁড়ে সে তো ছাগলের ঘরে এসে উপস্থিত হল, কিন্ত তবু ছাগল খেতে পেল না।
রাখালের দল তখন সেখানে বসেছিল। তারা শিয়ালকে দেখতে পেয়েই ধরে বেঁধে ফেলল। তারপর তাকে খোঁটায় বেঁধে রেখে তারা চলে গেল। যাবার সময় বলে গেল, ‘কাল এটাকে নিয়ে সকলকে তামাশা দেখাব, তারপর মারব। আজ রাত হয়ে গেছে।’
রাখালেরা চলে গেছে, শিয়াল মাথা হেঁট করে বসে আছে, এমন সময় এক বাঘ সেইখান দিয়ে যাচ্ছে। শিয়ালকে দেখে বাঘ ভারি আশ্চর্য হয়ে বললে, ‘কি ভাগ্নে, এখানে বসে কি করছ?’
শিয়াল বললে, ‘বিয়ে করছি।’